Home / ইসলাম / ইসলামের নবী (স.) মুসলমানদের ঐক্যের প্রতীক
ঐক্যের প্রতীক

ইসলামের নবী (স.) মুসলমানদের ঐক্যের প্রতীক

ইসলামি বিশ্ব হচ্ছে একই দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মতো বা একটি সমন্বিত পরিবারের ন্যায়, যার শেকড় অনেক গভীরে এবং এর সংযোগ স্থাপনকারী শাক্তিশালী উপাদান রয়েছে, যা কিনা এই বৃহৎ ধর্মীয় পরিবারকে সুদৃঢ় (সমন্বিত) ও শক্তিশালী করতে পারে এবং সদা-সর্বদা ও সর্বত্র একত্র রাখতে পারে।

রসুলগণের এবং আল্লাহর মনোনীত ব্যক্তিদের সিলমোহর মুহাম্মদ মুস্তফা (স.)-এর উজ্জ্বল ও বরকতময় অস্তিত্ব বিশ্বের সমস্ত মুসলমানের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম, যা সর্বশেষ ঐশী ধর্ম হিসেবে ইসলাম ও আসমানি কিতাব আল কুরআনের পাশাপাশি বিশ্বের সমস্ত মুসলমান ও ইসলামি উম্মাহর ধারাবাহিকতা ও স্থায়িত্বের স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত।

পবিত্র কুরআনে সুরা ফাতাহর ২৯ নম্বর আয়াতে ইসলামের পবিত্র নবী মুহাম্মদ মুস্তাফা (স.)-এর অনুসরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে বলেন, ‘মুহাম্মদ আল্লাহর রসুল এবং তার সঙ্গীরা কাফেরদের বিরুদ্ধে কঠোর এবং তাদের মধ্যে দয়ালু।’ ইসলামের নবীকে অনুসরণ করার ক্ষেত্রে এই প্রধান নির্দেশকের ধারণাটি খুবই স্বচ্ছ ও পরিষ্কার এবং এর ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যার অবকাশ নেই।

সব ঐতিহাসিক যুগে কুফরের ফ্রন্ট মুসলমানদের সামনে ছিল এবং মুসলমানদের সঙ্গে শত্রুতা ও বিরোধিতার মাধ্যমে এর সীমারেখা নির্ধারণ করেছে। আজ এই ফ্রন্ট স্পষ্ট এবং যারা পবিত্র কুরআনে অগ্নিসংযোগ করছে এবং ইসলামের নবীকে অবমাননা করছে, তারাই কুফর ফ্রন্ট।

এই ঐশী নির্দেশ অনুসারে, বিশ্বের মুসলমানেরা যে জাতি, বর্ণ বা যে ভৌগোলিক অস্থানেরই অধিকারী হোক না কেন, এমনকি তারা ইসলামের যে মাজহাবের অনুসারিই হোক না কেন, তাদের একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে হবে এবং যে কোনো ধরনের বিভেদ ও দ্বন্দ্ব-সংঘাত পরিহার করতে হবে। মুসলিম ক্যালেন্ডারে কিছু ঐতিহাসিক উপলক্ষ্য ইসলামের নবী এবং পবিত্র কুরআনের সঙ্গে প্রতিশ্রুতি নবায়ন করার একটি ভালো সুযোগ।

এ উপলক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি হল ইসলামের নবীর পবিত্র জন্মদিন, যা সুন্নি মাজহাবের অনুসারীরা ১২ রবিউল আউয়াল আর আহলে বাইত (স.)-এর অনুসারীরা এই মাসের ১৭ তারিখে উদ্যাপন করে থাকেন। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান সমস্ত মুসলমানের ঐক্য ও সংহতিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বকে সুসংহত করতে এ দুটি দিনের মধ্যবর্তী ব্যবধানকে ঐক্য সপ্তাহ হিসেবে নামকরণ করেছে, যাতে ক্যালেন্ডারে এই পাঁচ দিনের ব্যবধান তাদের মধ্যে কোনো বিভেদ বা দূরত্ব তৈরির কারণ না হয়।

আশা করা যায়, ইসলামের মহানবী (স.)-এর জন্মবার্ষিকী ও ঐক্য সপ্তাহ বিশ্বের সব মুসলমানের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্ব আরো শক্তিশালী করার উপলক্ষ্য হবে।

লেখক: কালচারাল কাউন্সেলর, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাস, ঢাকা বঙ্গানুবাদ: মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
এজি