ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কালিবাফ দাবি করেছেন, ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের হামলায় ইসরায়েলের হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা সরকারিভাবে প্রকাশিত তথ্যের চেয়ে অনেক বেশি। তিনি বলেন, ইসরায়েলের তিন হাজার ৫০০ জন আহত হওয়ার তথ্য থেকে বোঝা যায়, অন্তত ৫শ জন নিহত হয়েছে।
ইরান ও ইসরায়েল ১২ দিনের যুদ্ধ নিয়ে ইরানের আইআরআইবি-১ টিভি চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ বাকের কালিবাফ এ দাবি করেছেন। ইরানের এ কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তা গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছে, তাদের আহতের সংখ্যা ৩ হাজার ৫২০ জন। এ হিসাব অনুযায়ী কমপক্ষে ৫শ জন নিহত হওয়ার কথা। প্রকৃতপক্ষে ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সরকারিভাবে জানানো সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি ছিল।
যুদ্ধবিরতির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকার জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক আগ্রাসন বন্ধ হয়েছে মূলত তাদের ব্যর্থতার কারণে—কোনোরকম নমনীয় মনোভাবের কারণে নয়।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, স্থল ও আকাশে ইরানের নিয়ন্ত্রণই ছিল ইসরায়েলের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ। তার কথায়, আমরা ইসরায়েলের সামরিক ও প্রতিরক্ষা কেন্দ্রগুলো অকার্যকর করে দিয়েছি। ইরানের স্পিকার জানান, যুদ্ধের শেষদিকে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নির্ভুলতার হার ছিল ৯০ শতাংশের বেশি। এর ফলে ইসরায়েলের প্রধান সামরিক ও বিমান প্রতিরক্ষা স্থাপনাগুলো অচল হয়ে পড়ে।
কালিবাফ দাবি করেন, ইরানের লক্ষ্যবস্তুর ওপর ছিল পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ—যার ফলে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়। তিনি বলেন, ইরান কেবল ইসরায়েলের বিরুদ্ধেই লড়েনি, বরং মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো ও পশ্চিমা শক্তির বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়েছে।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের বিরুদ্ধে হামলার জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ যুদ্ধকালীন আলোচনার ভেতরে হামলা চালানো যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী নীতিরই বহিঃপ্রকাশ ।’ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনার প্রসঙ্গে কালিবাফ বলেন, যখন আলোচনা চলছিল তখনই আমেরিকা ইরানে হামলা চালিয়ে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য প্রকাশ করেছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, যদি আমেরিকা সত্যিই কূটনৈতিক সমাধান চায়, তাহলে তাদের প্রথমেই নিজেদের আগ্রাসন ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ব্যাখ্যা দিতে হবে। তার কথায়, আলোচনার মধ্যে আমাদের ওপর হামলা চালাল কেন—এ প্রশ্নের উত্তর আমেরিকাকে দিতেই হবে। তিনি বলেন,যদি আমেরিকা সত্যিই সৎ হয়,তাহলে তারা সাম্প্রতিক হামলায় যে ক্ষতি করেছে,তার পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ইরানি কর্মকর্তা আরও বলেছেন,‘বুম বুম তেলআবিব’ গানটি এখন ইরানের গণকূটনীতির প্রতীক হয়ে উঠেছে। এক বিলিয়ন ভিউ পাওয়া এ গান ‘মূল্যবোধের যুদ্ধে ইরানের বিজয়ের প্রমাণ’।
১২ জুলাই ২০২৫
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur