করোনা মহামারিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এফএ কাপের ফাইনালে ফিরেছে দর্শক। লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে গ্যালারিপূর্ণ কয়েক হাজার দর্শকের সামনে ফাইনালে ইসরাইলের চেলসিকে হারাল ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটি।
৫২ বছর পর ফাইনালে উঠে শিরোপা হাতছাড়া করেনি ইংলিশ ক্লাবটি।
চেলসিকে ১-০ তে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এফএ কাপের মুকুট পরল ব্রেন্ডেন রজার্সের দল। আর এই মহারণের সাক্ষী হয়েছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত খেলোয়াড় হামজা চৌধুরী।
শুধু নিজেই সাক্ষী হননি, সুযোগ পেয়ে ইতিহাসই রচনা করে বসলেন। রেফারির শেষ বাঁশিতে শিরোপা নিশ্চিতের পর ব্যতিক্রমী এক উদযাপন করলেন হামজা। যা লেস্টার সিটির মুকুটের পালকে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটালো।
শিরোপাজয়ের পর সতীর্থ ওয়েসলি ফোফানাকে সঙ্গে নিয়ে গ্যালারির দর্শক ও বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরলেন নির্যাতিত ফিলিস্তিনের পতাকা। দেশটিতে চলমান ইজরাইলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেন এভাবেই।
এমন শিরোপা জয়ের পর সাধারণত খেলোয়াড়রা নিজ ক্লাব বা দেশের পতাকা গায়ে জড়ান, মাথায় বাঁধেন, চুমু খান।
কিন্তু লেস্টার সিটির দুই মুসলিম খেলোয়াড় হাতে তুলে নিলেন নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের পতাকা।
এফএ কাপের মতো ইউরোপের বৃহৎ টুর্নামেন্টে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে অনন্য নজির গড়লেন হামজা-ফোফানা।
এ এক অনন্য নজিরই বটে। কেননা প্রতিপক্ষ চেলসি ইসরাইল সমর্থিত একটি দল। এর মালিক রোমান আব্রাহমভিচ একজন রুশ বংশোদ্ভূত ইসরাইলি ধনকুবের। তিনি একজন ইহুদি।
২০১৮ সালে ব্রিটিশ ভিসা নবায়ন না হওয়ায় তিনি ইসরাইলি নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ফিলিস্তিতে ইহুদি বসতি স্থাপনে ১০ কোটি ডলার দেন এই আব্রাহমভিচ। জেরুজালেমে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের সংগঠন এলাদ -এর মাধ্যমে ইসরাইলকে সহযোগিতা করছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
আর সেই চেলসিকে হারিয়েই মাঠে ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ালেন বাংলাদেশের হামজা।
প্রসঙ্গত, এর আগে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন লিভারপুলের মিসরীয় ফরোয়ার্ড মোহামেদ সালাহ, আর্সেনাল খেলোয়াড় মোহামেদ এলনিনি ও ম্যানচেস্টার সিটির তারকা ফুটবলার রিয়াদ মাহরেজ।
গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলা থামাতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনসহ বিশ্ব নেতাদের ‘ক্ষমতার মধ্যে সবকিছু’ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গত মঙ্গলবার টুইটে মিশরীয় ফুটবল আইকন লেখেন, ‘আমি বিগত ৪ বছর ধরে যে দেশে বসবাস করছি তার প্রধানমন্ত্রীসহ (বরিস জনসন) সকল বিশ্ব নেতাকে আহ্বান জানাচ্ছি, ফিলিস্তিনের নিরপরাধ মানুষ হত্যা ও তাদের ওপর সহিংসতা তাৎক্ষণিক বন্ধের জন্য আপনাদের ক্ষমতার মধ্যে যা করার সব করুন। যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট।’
তথ্যসূত্র: ডেইলি মেইল, বিবিসি, লেস্টার সিটি মারকারি, টুইটার