গেলো বছরের ডিসেম্বরের ১৫ তারিখে ফিলিস্তিনের রামাল্লায় মোহাম্মদ তামিমিকে হত্যা করে ইসরাইলের সেনারা। শোকবিহ্বল ফিলিস্তিনি তরুণী নূর তামিমি তার চাচাতো ভাই মোহাম্মদ তামিমির বাড়ির উঠানে বসে ছিলেন।
কিছুক্ষণ আগে খবর পেয়েছেন মোহাম্মদকে গুলি করেছে ইসরাইলি সৈন্যরা। মাথায় গুলির আঘাত গুরুতর। মারাও যেতে পারে তার ১৫ বছর বয়সী ছোট ভাইটি।
এর মাঝেই সেই বাড়িতে হানা দেয় কয়েকজন সৈন্য। ছোট ভাইকে গুলি করেছে, আবার এখন এসেছে বাড়িতে অভিযান চালাতে! ইসরাইলি সৈন্যদের দেখে মাথা ঠিক রাখতে পারেননি নূর। হনহন করে এগিয়ে যান অত্যাধুনিক অস্ত্রধারী সেনা সদস্যদের দিকে। তারপর কেউ কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই গালে চড় বসিয়ে দেন দুই সৈন্যের! সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে আসে ছোট বোন আহেদ তামিমিও। দুই বোন মিলে বেশ কয়েকবার চপেটাঘাত করেন হানাদারদের মুখে। ঘটনাস্থলে অনেকে ক্যামেরা নিয়ে থাকায় আপাতত কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি সৈন্যরা।
এই ঘটনার পরপরই নূর, আহেদ এবং আহেদের মাকে গ্রেফতার করা হয়। ইসরাইলি কারাগারে এখনো আহেদ এবং তার মা এখনো আটক থাকলেও ১৬ দিন কারাভোগের পর মুক্ত হয়েছেন নূর তামিমি। ফিলিস্তিনি মিডিয়ার কল্যাণে জাতীয় বীরের সম্মান পাচ্ছেন দুই বোন। তাদের সাহসিকতা নিয়ে রচিত হয়ে গেছে ডজনেরও বেশি গান।
মুক্তি পাওয়ার পর ইসরাইলি পত্রিকা হারেৎজ নূরের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন তিনি সৈন্যদের গালে চড় মেরেছিলেন। জবাবে ২১ বছরের এ তরুণী বলেন, আমি তাদের আমার বাড়ির আঙিনা থেকে তাড়িয়ে দিতে চেয়েছিলাম।
তার কাছে জানতে চাওয়া হয় তিনি শাস্তি পাওয়ার মতো কিছু করেছেন বলে মনে করেন কিনা? জবাবে নূর বলেন, না, আমি এ কাজের জন্য মোটেই দুঃখিত বা লজ্জিত নই। তারা আমাদের ঘরবাড়িতে হামলা করছে। ইসরাইলি সৈন্যরাই তো তারা দখলদার।
সাংবাদিক নূরকে আরও জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি আবার এ রকম করবেন। দৃঢ়কণ্ঠে এই তরুণীর জবাব, আবার যদি তারা হামলা করে, আমি আবারো তাদের থাপড়াবো।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur