দেশের ৬ জেলার ৫টি অভয়াশ্রমে ইলিশ আহরণে ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। তবে নিষেধাজ্ঞা না থাকায় মুন্সিগঞ্জের পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। ভোর থেকেই জেলার মৎস্য আড়ৎসহ বাজারগুলো ভরে উঠছে রূপালি ইলিশে। সরবরাহ বেশি থাকায় গত সপ্তাহের চেয়ে তুলনামূলক দাম ২শ থেকে আড়ইশ টাকা কম বলেও জানিয়েছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। এতে বেড়েছে বিক্রি।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার পাশ দিয়ে প্রবাহমান পদ্মা নদীর ৩৫ কিলোমিটার এলাকা, পাশাপাশি ১২কিলোমিটার শাখা নদী রয়েছে। জেলায় ইলিশ ধরার জেলে রয়েছেন ৩ হাজার ৬ শতাধিক। নিষেধাজ্ঞা না থাকায় পদ্মার বিস্তীর্ণ এসব এলাকায় মাছ ধরছেন জেলেরা।
শনিবার সকালে সরজমিনে পদ্মা পাড়ের মাওয়া মৎস্য আড়ৎগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ছোট-বড়-মাঝারি আকৃতির ইলিশে সয়লাব আড়ৎগুলো। ক্রেতা বিক্রেতাদেরও রয়েছে হাঁক-ডাক। ধুম চলছে বেচা-কেনার। কেজি ও হালি, পাইকারী ও খুচরাভাবে বিক্রি হচ্ছে মাছ। প্রতিটি আড়তে বিক্রেতারা পসরা সাজিয়ে রেখেছেন। শতশত ক্রেতা বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে জমজমাট চলছে ইলিশের কেনা-বেচা।
আড়তের ব্যবসায়ীরা জানান, এদিন বড় আকৃতির (এক কেজির বেশি থেকে দেড় কেজি) ইলিশ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৪-১৫০০ টাকা, মাঝারি আকৃতির (১ কেজি) কেজি ১ হাজার-১২শ টাকা ও ছোট আকৃতির (৭শ-৯শ গ্রাম) ৮০০-৯০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে যা ছিলো আরো বেশি। সরবরাহ ভালো থাকায় গত সপ্তাহে এসব মাছের কেজিতে দাম কমেছে ২শ থেকে আড়াইশ টাকা। এতে ক্রেতাদের উপস্থিতিও বেশ ভালো।
বিক্রেতা মো. আকাশ জানান, মাওয়া আড়তে এখন সব পদ্মার ইলিশ। দিনরাত জেলেরা মাছ ধরে ভোরে আড়তে বিক্রি করতে আসছেন। এখন প্রচুর ইলিশ মাছ আসছে।
ক্রেতা সারওয়ার হোসেন জানান, টাটকা ইলিশ কেনার জন্য ভোরে আড়তে এসেছি। গত সপ্তাহের চেয়ে আজ দাম কিছুটা কম। তিন কেজি ইলিশ কিনেছি ৩৬শ টাকা দিয়ে। দাম কম থাকলে ক্রেতাদের জন্য সুবিধা।
মাওয়া মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম জানান, আমাদের এখানে ৩৯টি আড়ৎ রয়েছে। সকাল থেকে স্থানীয় বিভিন্ন বাজারের পাইকারসহ দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসেন। মাওয়া আড়তে আসা ক্রেতাদের প্রথম চাহিদা থাকে পদ্মার ইলিশ, ঢাকা থেকেও মাছ কিনতে অনেকে আসেন। কয়েকদিন ধরে নদীতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ায় আমাদের এখানে সরবরাহ ভালো, তাই দাম কিছুটা কমেছে। ১৫শ টাকার মাছ এখন ১২-১৩শ টাকা। ক্রেতারাও খুশি, বিক্রি বাড়ায় বিক্রেতারাও খুশি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামসুল করিম জানান, মুন্সিগঞ্জে পদ্মা নদীর ৩৫ কিলোমিটার ও মেঘনা নদীর ৩৫ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে। যেখান থেকে ইলিশ আহরণ করে থাকেন জেলেরা। তবে মেঘনায় এখন মাছ না ধরলেও অভয়াশ্রম না হওয়ায় পদ্মা নদীর মুন্সিগঞ্জ অংশে ইলিশ ধরছেন জেলেরা। বিষয়টিতে আমাদের তদারকি রয়েছে।