ইলিশ না থাকায় হাঁকডাক নেই বড়স্টেশন মাছঘাটে

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ না থাকায় প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বড়স্টেশন মাছঘাটে ইলিশ নিয়ে হাঁকডাক নেই ব্যবসায়ীদের। প্রতিবছর নদীতে ইলিশ কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের মাঝে হাহাকার শুরু হয়েছে। নদীতে ইলিশ না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন চাঁদপুর মাছ ঘাটের ইলিশ ব্যবসায়ী ও কর্মচারীসহ মৎস্য শ্রমিকরা।

মাছঘাট ঘুরে দেখা যায়, ইলিশের জন্য ঘাটে অধিকাংশ আড়তদাররা বসে রয়েছেন। আড়তের পাশে বসে কিছু খুচরা ব্যবসায়ী অল্প কিছু ইলিশ বিক্রি করলেও পুরো মাছঘাট ইলিশ শূন্য।

গত ৩০ মার্চ শেষ হয়েছে জাটকা রক্ষায় ইলিশের অভয়াশ্রম মৌসুম। দীর্ঘ দুমাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে পহেলা এপ্রিল থেকে বহু আশা নিয়ে পদ্মা-মেঘনার ৭০ কিলোমিটার এলাকায় বিচরণ করছে চাঁদপুরের অর্ধ লক্ষাধিক জেলে। কিন্তু কাঙ্খিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন ওইসব জেলেরা। যদিও অন্যবছর দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশে সরগরম থাকতো বড়স্টেশন মাছঘাট। কিন্তু এই বছর দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ না আসায় কর্মব্যস্ততায় ভাটা পড়েছে।

এদিকে নদীর তীরবর্তী হরিণা, বহরিয়া, লক্ষ্মীপুর ও আনন্দবাজার এলাকার জেলেরা নদীতে ইলিশ না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন। যে পরিমান মাছ পাচ্ছেন তা দিয়ে তাদের নৌকার জ¦ালানি খরচও উঠছে না বলে জানান তারা।

চাঁদপুর সদরের আনন্দবাজার এলাকার জেলে খোরশেদ আলম বলেন, ‘সরকার দুইমাস মাছ ধরায় নিষেজ্ঞা দিয়েছে, আমরা তা পালন করেছি। কিন্তু কষ্টের বিষয় দুইমাস পর নদীতে নেমে কোন ইলিশের দেখা পাইনা। ছোটখাট কিছু ইলিশ পাই তাদিয়ে কি পরিবার চলে। সরকার আমদের দিকে একটু তাকালে আমরা রক্ষা পেতাম।’

নদীতে ইলিশ না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন ব্যবসায়ী ও কর্মচারীসহ শ্রমিকরা

চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটের ব্যবসায়ী রুবেল গাজী বলেন, ‘পদ্মা-মেঘনার কিছু ইলিশ আছে, তা নিয়ে আমরা বসে সময় কাটাই। দাম বেশি বলে ক্রেতারাও কিনছে না। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ এখনো আসতে শুরু করেনি। বর্তমানে ৭০০-৮০০ গ্রামের প্রতিমণ ইলিশ ৪৭ হাজার টাকা, ১৪০০-১৫০০ গ্রামের প্রতিমণ ইলিশ ৭০ হাজার টাকা ও ১৭০০-১৮০০ গ্রামের ইলশের মণ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি ইলিশের আমদানি বাড়লে দাম আরো কমে আসবে।’

চাঁদপুর মৎস্য ও বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবেবরাত সরকার বলেন, ‘দিন দিন ইলিশ কমে যাচ্ছে। কেন কমে যাচ্ছে তা নিয়ে গবেষকদের গবেষণা করা দরকার। যদিও এখন পুরোপুরি ইলিশের মৌসুম না। তাই পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ নেই। আমরা আশাবাদি জুন-জুলাই মাস থেকে জেলেরা ইলিশ পাবে। তখন আমদানীও বাড়বে। পুরোমাছঘাট ইলিশে ভরপুর থাকবে।’

প্রতিবেদক:শরীফুল ইসলাম, ১৯ মে ২০২২

Share