ইলিশ আমাদের জাতীয় প্রাকৃতিক সম্পদ। এ সম্পদ রক্ষা করা আমাদের সকলেরই দায়িত্ব। দেশের ৩৫ টি উপজেলা নদী উপকূলীয় হিসেবে বিবেচনায় আনা হয়েছে।
তাই প্রতিবছরের মতই এবারও দেশব্যাপি মার্চ-এপ্রিল এ দু’মাস চাঁদপুরের পদ্ম মেঘানাসহ দেশের ৫ টি অঞ্চলের নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষেধ রয়েছে।
এ কারণে জেলেরা জাল নৌকা সব নদী পাড়ে তুলে রেখেছেন। চাঁদপুরে ৪১ হাজার ১শ ৮৯ জন জেলে রয়েছে।
চাঁদপুরে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ বিকেল ৩টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা জাটকা রক্ষা টাস্কফোর্স কমিটির সভা একটি সভা হয়েছিল । এতে সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো.আব্দুস সবুর মন্ডল ।
তিনি বলেছিলেন, ‘ ইলিশকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর জেলা ব্র্যান্ডিংয়ের নামকরণ হয়েছে। তাই ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি তথা জাটকা রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। জাটকা রক্ষায় যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। মার্চ-এপ্রিল দু’ মাস অভয়াশ্রম কার্যক্রম চলবে। এ সময় অভয়াশ্রম অঞ্চলে কোনো প্রকার জাল ফেলা ও মাছ ধরা যাবে না।
অভয়াশ্রম কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে এখন থেকে গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করতে তিনি গুরুত্বারোপ করেন। এ জন্যে মৎস্য বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। নদীতে কোনো জেলে জাটকা ধরতে পারবে না। যে সব জেলে জাটকা ধরবে তাদের আটক করা হবে।
জেলেদের পাশাপাশি জাটকা বিক্রয় ও পরিবহনের সাথে জড়িতদেরও আটক করা হবে।’ আমরা জেলা প্রশাসকের সাথে একমত। যে জেলেগণ ইলিশ আহরণ করে জীবন-জীবিকা চালাবে তারাই জাটকা নিধন করে তাদের জীবিকার পথে বাধা সৃষ্টি করে যাচ্ছে।
তবুও মানবিকভাবে বিচার করলে দেখা যায়, বেকার জেলে পরিবারগুলো এক প্রকার মানবেতর জীবন যাপন করছে। যথাসময়ে খাদ্য সহায়তা তাদের বড়ই প্রয়োজন। জেলেদের খাদ্য সহায়তার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতেই বিবেচনা করা প্রয়োজন।
কর্মসূচির আগে জনপ্রতিনিধি ও মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সরকারি সহায়তার আশ্বাস দিলেও এখনো চাল বরাদ্দ পাওয়ার খবর আমরা পাইনি।
চাঁদপুর হরিণা, বহরিয়া, লক্ষ্মীপুর ও দোকানঘর অনেক জেলেই যথাসময়ে খাদ্য সহায়তা পাবার দিন গুণছিল। সরকারি নির্দেশ তারা মান্য করেই চলছে। অথচ সরকারি ওই খাদ্য সহায়তা আসতে বিলম্ব হওয়ায় তাদের দিনাতিপাত কষ্টেই কাটছে। শুধু খাদ্য সহায়তার চাল দিয়েই তো আর সংসার চলে না।
কর্মসূচির ১৫ দিন আগেই জনপ্রতিনিধরা জেলেদের খাদ্য সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৬ সাল থেকে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ১শ ’কি.মি. এলাকায় দেশের ৫টি অঞ্চলে এ কর্মসূচি চলে আসছে। প্রতি বছরেই তাদের এ সহায়তার বিষয়টি যথাযথভাবে পালন হয়নি ।
এমতাবস্থায় চাঁদপুরের ৪১ হাজার জেলে ও তাদের পরিবারের প্রতি সদয় হয়ে খাদ্য সহায়তার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা বড়ই প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। তা’হলেই জাতীয় প্রাকৃতিক সম্পদ ইলিশ একদিকে রক্ষা পাবে অপর দিকে ইলিশকে কেন্দ্র করে ‘চাঁদপুর জেলা ব্র্যান্ডিংয়ের নামকরণ’ বাস্তবায়নের পথ আরো তরান্বিত হবে।
সম্পাদকীয়
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯: ৩১ পিএম, ১৭ মার্চ ২০১৭, শুক্রবার
ডিএইচ