জেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ চাঁদপুর সরকারি কলেজে বর্ণীল আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইলিশ ছাড়াই ১৪২৪ বাংলা নববর্ষ উদযাপন করলো চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ।
পহেলা বৈশাখের দিন সকাল সাতটা থেকেই শিক্ষার্থীদের বৈশাখী-পদচারনায় কলেজ ক্যাম্পাসে নতুন বছরের হাওয়া বইতে শুরু করে।
পরে সকাল ৯টায় কলেজের প্রায় প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট থেকে একে একে র্যালি এসে জড়োহতে থাকে কলেজের মূলভবনের সামনে। এখানথেকেই একসাথে কলেজের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বেরহয়।
আনন্দ শোভাযাত্রাটি কলেজের প্রধান গেটদিয়ে বেরহোয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা প্রদক্ষিণ করে আবার কলেজে এসে শেষহয়।
শিক্ষার্থীরা ঢাক-ঢোল, রঙ-বেরঙের ফেস্টুন, গ্রামবাংলার ব্যবহৃত কুলা, কলস, এবং বিভিন্ন গণসচেতনতামূলক শ্লোগান দিয়ে র্যালিতে অংশগ্রহণ করে। শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীর সেজেছিলো বৈশাখীসাজে। দেখে মনেহোয়েছিলো এযেনো কলেজের সকল বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এক মিলনমেলা। ফুটে উঠেছিলো বাঙ্গালীর পরম বাঙ্গালিত্ব।
প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও চাঁদপুর সরকারি কলেজে ঘটা করে বাংলা বর্ষবরনের আয়োজন করে বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, রসায়ন, অর্থনীতি ও ইতিহাস বিভাগ।
তবে সবচেয়ে বড় ও রঙচঙে আনন্দঘন অনুষ্ঠানটি হয়েছিলো কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগেই।
বিভাগের শিল্পীরা বৈশাখের আগমনী গান গেয়ে স্বাগত জানান নববর্ষকে, মাতিয়ে রাখে পুরো কলেজ ক্যাম্পাস। এবছর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে বৈশাখী আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কলেজের শহীদ রাজু ভবনের অডিটোরিয়ামে।
সকাল ১১ টায় বিভাগীয় প্রধান অসিত বরণ দাশের সভাপতিত্বে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ এস এম দেলওয়ার হোসেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ শাহ আলম। এসময় বিভাগের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথিরর বক্তব্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ এস এম দেলওয়ার হোসেন বলেন “আজ চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস রমনার বটমূলের মতই বাংলা বর্ষবরণ উৎসবে মুখর ছিলো। আমরা রমনা বটমূলের চেয়ে ইকটুও কম উপভোগ করিনি। বাঙ্গালির এই সংস্কৃতি লালন করার মাধ্যমে একজন প্রকৃত বাঙ্গালী হতে পারবো”।
এবার খানিকটা ভিন্ন আঙ্গিকে ১লা বৈশাখ পালন করে এই ডিপার্টমেন্ট সহ কালেজের অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট গুলো। ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর হওয়া সত্ত্বেও কোনো ডিপার্টমেন্টেই পয়লা বৈশাখ ১৪২৪-এর খাদ্যতালিকায় ইলিশের কোনো আইটেম ছিলো না।
কারণ হিসেবে জানাজায় জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে এ বছর ইলিশ ছাড়াই বাংলা নববর্ষ উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো প্রতিটি বিভাগ। যার ফলে কোনো বিভাগেই দেখা যায়নি ইলিশ। এদিকে খাদ্য তালিকায় ছিলো বাহারি সব আইটেম। খাদ্য তালিকায় ছিলো পান্তা ভাতের সাথে রুই মাছ, বিভিন্ন ধরনের ভর্তা যেমন মাছ ভর্তা, শুটকি ভর্তা, চিংড়ি ভর্তা, তিলের ভর্তা, আলু ভর্তা, শসা, গাজর, কাচা মরিচ সহ আরো কতকি।
সবকিছুই ছিলো ছিলোনা শুধু ইলিশ। কিন্তু ইলিশ না থাকলেও তার কোনো প্রভাবই পরেনি কোন শিক্ষার্থীর মাঝে।
আমরা কলেজের এই বর্ষবরণ উৎসবে আগত কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি,
তারা আমাদের জানিয়েছে জাতীয় সার্ধেই কর্তৃপক্ষ এবারের বৈশাখী খাদ্যতালিকায় ইলিশ মাছ রাখেনি, এতে আমরা মোটেও অসন্তুষ্ট নই, বরং শিক্ষার্থীরা এই প্রদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে।
এম.এ.শাকুর
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৩ : ২৩ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০১৭, শুক্রবার
ডিএইচ