চাঁদপুরে ভরা মৌসুমে ইলিশের আকাল, প্রতি কেজি ১৩০০ টাকা

চাঁদপুরের বাজারে ইলিশ মাছের আমদানি কমে গেছে। জেলার বড় স্টেশনে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে আগস্ট মাসে দিনে গড়ে ৮০০ থেকে এক হাজার মণ ইলিশ আমদানি হলেও গত এক সপ্তাহ ধরে আমদানি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ মণ। এতে দামও কিছুটা বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ইলিশের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। ওজন অনুযায়ী দামের পার্থক্য থাকলেও গড়ে প্রতি কেজি ইলিশ ১৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার বড় স্টেশন বাজারে আসা ক্রেতারা বলেন, বন্ধের সুযোগে ইলিশ কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু বাজারে ইলিশ কম আসায় দাম বেশি। এ কারণে অল্প করে মাছ কিনেছি। গত বছর এই সময়ে ইলিশের দাম আরও অনেক কম ছিল।

চাঁদপুর বড় স্টেশনের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সবেবরাত সরকার বলেন, মিঠা পানিতে তথা চাঁদপুর ও নোয়াখালী নদী অঞ্চলে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে। সাগর অঞ্চলে যেখানে ধরা পড়ছে সেখান থেকে চাঁদপুরে এখন ইলিশ কম আসে। কারণ, ওইসব এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে মাছের বাজার গড়ে উঠেছে।

তিনি আরও বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে চাঁদপুর বড় স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গড়ে প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ মণ ইলিশ আমদানি হচ্ছে। এরমধ্যে চাঁদপুর নদী অঞ্চলের মাছ আসছে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ মণ। মাছের আমদানি কম হওয়ায় দামও কিছুটা বেড়েছে।

মাছ ব্যবসায়ী মো. সাগর বলেন, আজকে সাগর থেকে তিনটি ফিশিং ট্রলার এসেছে। এগুলোতে প্রায় ৩০০ মণ ইলিশ আছে। সবগুলো ছোট মাছ।

তিনি আরও বলেন, বন্ধের দিন শুক্র ও শনিবার ইলিশের দাম বেশি থাকে। শুক্রবার এক কেজি থেকে ১২০০ গ্রাম ওজনের লোকাল ইলিশ প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ হাজার টাকা দরে। কেজিপ্রতি ১৩০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। আর সাগর অঞ্চলের ইলিশের মণ বিক্রি হচ্ছে ৪৩ হাজার টাকায়। এছাড়া ৮০০ গ্রামের মাছের মণ ৩৬ হাজার টাকা এবং ৫০০ গ্রামের মণ ২৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চাঁদপুরের নদী অঞ্চলে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় দামও কমছে না। অন্যান্য বছর অমাবস্যা-পূর্ণিমায় যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়ে, এবার তার চেয়ে অনেক কম ধরা পড়েছে। এক সপ্তাহ পর ইলিশের আমদানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান বলেন, গত মাসে ভালো ইলিশ বাজারে এসেছে। এখন মরা কটাল চলায় ইলিশ কম আসছে। সামনে আরেকটা অমাবস্যা আসছে। অর্থাৎ, এক সপ্তাহের মধ্যেই আবার প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাবে।

তিনি আরও বলেন, ইলিশ প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে একেবারে সুনির্দিষ্ট করে বলা না গেলেও অমাবস্যা ও পূর্ণিমা ভালো সময়। তাই মৎস্যজীবীদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে।

চাঁদপুর করেসপন্ডেট

Share