চাঁদপুর

আজ মধ্যরাত থেকে বেকার হয়ে পড়বে চাঁদপুরের ৫১ হাজার ১৯০ জেলে

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় মধ্যরাত থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনায় ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার।

১৩ অক্টোবর,মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে।

নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ আহরণ,পরিবহন, বাজারজাতকরণ, মজুত ও ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এদিকে চাঁদপুরে ৫১ হাজার ১৯০জন জেলে তারা আজ মধ্যরাত থেকে বেকার হয়ে পড়বে।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নেহাশিষ দাশ জানান, মা ইলিশ রক্ষায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় চেয়ারম্যান মেম্বারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই বিষয়ে আন্তরিক সহযোগিতা করবেন। আর জেলেদের প্রতি আহবান, এই নিষেধাজ্ঞার সময় মা ইলিশ রক্ষা করলে জেলেরাই বেশি নদীতে ইলিশ মাছ ধরতে পারবে। এই মাছ জেলেদেরই সম্পদ।

চাঁদপুরের জেলার মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে লক্ষ্ণীপুর জেলার চর আলেকজেন্ডার পর্যন্ত ১শ কি.মি এর মধ্যে মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে আমিরাবাদ পর্যন্ত ২৫ কি.মি নদী এলাকায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে কোন জেলে নদীতে নামতে পারবে না।

প্রতিবছর আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে ইলিশের ডিম ছাড়ার আসল সময়। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নদীতে ছুটে আসে। এই সময়কে বিবেচনায় নিয়ে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও মোট ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আইন অমান্যকারীকে মৎস্য আইনে সাজা প্রদান করা হবে।

জেলেদের বক্তব্য, নিষিদ্ধ সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে চাল সহায়তা পায় তারা। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় জেলেদের দাবি এ সহযোগিতা যেন বাড়ানো হয়।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট নদীকেন্দ্র,চাঁদপুরের ইলিশ গবেষক ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আনিছুর রহমান জানান, আমাদের দেশের জেলেদের যে ২২দিন নিষেধাজ্ঞার সময়ে ধার্য হয় এবং তারা সরকারের সেই আইন মেনে নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকে কিন্তু পক্ষান্তর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে জেলেরা এসে কোনো নিয়ম-নীতি না মেনে আইন অমান্য করে এই নিষেধাজ্ঞার সময়ে আমাদের দেশের জলসীমায় এসে মাছ ধরে নিয়ে যায়।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী জানান,চাঁদপুরে ৫১ হাজার ১৯০ জন জেলে আছে। এসব জেলেদের জন্য সরকার ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছে। এ পর্যন্ত চাঁদপুরে ৫০ হাজার জেলের জন্য ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ এসেছে। বাকীদের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।

মতলব উত্তর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম জানান, আমার উপজেলায় ৮ হাজার ৮৯৪ জন জেলে রয়েছে। সরকারিভাবে সকল সহযোগিতাই তাদের করা হবে কিন্তু নিষিদ্ধ সময়ে কাউকে নদীতে নামতে দেয়া হবে না। এই নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করলে ১ থেকে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক,১৩ অক্টোবর ২০২০

Share