সারাদেশ

ইলিশের পেটে বসে খাওয়া হয় পান্তা ইলিশ

পহেলা বৈশাখের এ উৎসবকে ঘিরে মাসব্যাপী ঐতিহ্যবাহী ও বাঙালি খাবারের ব্যাপক আয়োজন করেছে কুয়াকাটা ইলিশ পার্ক।

তবে পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হবে পুরো পার্কেই বাঙালি পরিবেশে মাটির বাসন-কোসনে খাবার পরিবেশন করা। এ বছর ৭২ ফুট দৈর্ঘ্য একটি ইলিশের ভাস্কর্যের পেটে বসে পর্যটকরা পান্তা-ইলিশ খেয়ে বৈশাখ উদযাপন করবে বলে আয়োজনকারীরা জানিয়েছেন।

বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কুয়াকাটা সেজেছে নতুন সাজে। হোটেল-মোটেলসহ রেস্তোরাগুলোতে এখন লেগেছে নতুনত্বের ছাপ।

ইলিশ পার্ক অ্যান্ড রিসোর্ট সূত্রে জানা গেছে, পহেলা বৈশাখ উদযাপনকে সামনে রেখে পার্কে ইতোমধ্যে বাঘ, সিংহ, হাতি, হরিণ, ক্যাঙ্গারু, কুমির, বক, কচ্ছপ ও জিরাফসহ নানা প্রজাতির জীবজন্তুর ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। সমগ্র পার্কের চারদিকে রয়েছে নানা প্রজাতির সামদ্রিক মাছের প্রতিকৃতি। পার্কে ঢুকলেই টম অ্যান্ড জেরি সমগ্র পার্ক ঘুরিয়ে নিয়ে যাবে ইলিশের রেস্তোরায়।

পার্কটি সাজানো হয়েছে ফুল ও ফলের গাছ দিয়ে। শুধু পহেলা বৈশাখ নয়, প্রতিদিন সকালে চলবে পান্তা-ইলিশসহ হরেক রকমের ভর্তা। দুপুরের থাকবে শর্ষে-ইলিশ, ইলিশ ভুনা, ইলিশ কারি, শাক-সবজি ও শুটকিসহ ৩০ প্রকারের ভর্তা ও চাটনি। সন্ধ্যার পরে পার্কে প্রবেশ করলে তাদের খেতে দেয়া হবে বাহারী পিঠা। রাতে পাওয়া যাবে ইলিশ ভাজা, চিংড়ি ভর্তা, ডাল ও শাক-সবজি। পুরো বৈশাখ জুড়ে এমন আয়োজন থাকবে বলে ইলিশ পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা সোয়েব আহম্মেদ জানান, প্রথমবারের মতো কুয়াকাটায় বেড়াতে আসলাম। তিনদিন ধরে এখানকার বিভিন্ন দর্শনীয় স্পট ঘুরে দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে। তবে বৈশাখ বরণে সবখানে যেন নতুনত্বের ছোঁয়া লেগেছে। এছাড়া ইলিশ পার্কের মধ্যে বাঁশ ও ছনের ঘর ও নানা প্রজাতির বন্য জীবজন্তুর ভাস্কর্য আমাদের আনন্দের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

টুরিস্ট গাইড আবুল হোসেন রাজু জানান, বৈশাখ বরণ করতে ইলিশ পার্ক এ বছর ব্যাপক আয়োজন হাতে নিয়েছে। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য এ রকম পর্যটন জোন ইলিশ পার্কটি কুয়াকাটায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খান এ রাজ্জক জানান, ব্যতিক্রম এ পার্কটি বিনোদনপ্রেমীদের কাছে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পহেলা বৈশাখে প্রতি বছরের মতো এবারও কুয়াকাটায় পর্যটকদের সমাগম ঘটবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ইলিশ পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, ২০১৬ থার্টিফার্স্ট নাইটে এ ইলিশ পার্কটি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে। বাংলা নববর্ষ এলে আমরা শুধু পহেলা বৈশাখকে ঘিরেই সবকিছু করছি। ইলিশ পার্কে এ আনন্দ উৎসব মাসব্যাপী ধরে রাখতে এই আয়োজন করা হয়েছে। আশা করি এতে অংশ নিলে বাঙালি খাবারের আসল স্বাদ নিতে পারবে বলে তিনি জানান।

কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ এসআই সঞ্জয় মণ্ডল জানিয়েছেন, সড়ক যোগাযোগ ভালো হওয়ায় এ বছর পহেলা বৈশাখে ব্যাপক পর্যটকদের আগামন ঘটতে পারে। টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে নৌ-পুলিশেরও টহল থাকবে।

টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোন ইনচার্জ এএসপি মীর ফসিউর রহমান বলেন, ‘বর্ষবরণ উৎসবকে ঘিরে অগনিত পর্যটকদের সমাগমকে মাথায় রেখে প্রতিটি টুরিস্ট পয়েন্ট পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।’ (বাংলামেইল)

Share