চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে চাহিদার তুলনায় ইলিশের প্রাপ্যতা কমেছে। যা পাওয়া যাচ্ছে, তার সবই আকারে ছোট। আর ৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ পাওয়া গেলেও তা সংখ্যায় খুবই কম। জেলে নৌকা পুরোদিন নদীতে চষে বেড়িয়ে হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি ইলিশ বিক্রি করতে পারেন না। ফলে অনেকটা অবসর সময় কাটাচ্ছেন জেলে ও মত্স্যব্যবসায়ীরা।
সকালে চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরিঘাটসংলগ্ন আড়তগুলোতে দেখা গেছে, অধিকাংশ মৎস্য ব্যবসায়ী বসে গল্প করে অবসর সময় কাটাচ্ছেন। আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পরে একজন জেলে ইলিশ নিয়ে আসছেন। আর মুহূর্তের মধ্যে সেই ইলিশ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
হরিণাঘাট এলাকার জেলে জাহাঙ্গীর আলম জানান, এক নৌকায় দুই জন ইলিশ ধরতে নেমেছিলেন। ইলিশ পেয়েছেন ছোট সাইজের দুই হালি। ডাকে তা বিক্রি হয়েছে ৭০০ টাকায়। তিনি জানান, অনেক সময় খালি হাতেও ফিরতে হয়। তখন জ্বালানির টাকাও উঠে না। এই ঘাটে শতাধিক জেলে নৌকা আছে। এ জেলেরা কেউ দিনে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি ইলিশ বিক্রি করতে পারেন না।
ঘাটের মাছ ব্যবসায়ী বিল্লাল ছৈয়াল জানান, শীত মৌসুম হিসেবে ইলিশের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও ক্রেতারা এসে ফিরে যায়। মূলত এই ঘাটে ইলিশ খুচরা বিক্রেতারাই বেশি ক্রয় করেন। একই ঘাটের আরেক মাছ ব্যবসায়ী মো. ইসমাইল জানান, এখন প্রতিদিন গড়ে ১৩-১৪টি আড়তে চার-পাঁচ মণ ইলিশ বিক্রি হয়। প্রতি হালি ছোট সাইজের ইলিশ বিক্রি হয় ৩৫০-৪০০ টাকা। ওজন হবে ২৫০-৩০০ গ্রাম। আর ৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হয় ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা।
তিনি আরও জানান, নদীতে জেলেরা ইলিশ ধরতে নামলে অনেক সময় নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের অভিযানের মুখে পড়ে। কারণ কারেন্টজাল দিয়ে ইলিশ আহরণ বছর জুড়েই নিষিদ্ধ, যে কারণে নদীতে জেলেরা কম যায়। কারণ সুতার জালে মাছ কম পাওয়া যায়।
চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম বলেন, ‘ইলিশ মাছ বছর জুড়ে কম বেশি পাওয়া যায়। তবে নিষিদ্ধ কারেন্টজাল দিয়ে মাছ না ধরার জন্য জেলেদেরকে বলছি এবং সরকারিভাবে জেলেদেরকে সুতার জাল দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে জেলেরা যাতে এই সময়টাতে বেকার হয়ে না পড়েন, তার জন্য উপকরণ হিসেবে বকনা বাছুর দেওয়া হচ্ছে।’
স্টাফ করেসপন্ডেট, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩