চাঁদপুরে ইলিশশূন্য আড়ৎ এখন তেলাপিয়ার দখলে

ইলিশের রাজধানী নামে খ্যাত চাঁদপুর মৎস্য আড়ৎ এখন তেলাপিয়া মাছের দখলে। দুই মাসের জাটকা রক্ষা কর্মসূচী পাল্টে দিয়েছে আড়ৎগুলোর চেহারা।

এখন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা দাঁড়ি পাল্লা আর ক্যাশ বাক্স নিয়ে বসে সময় কাটাচ্ছে। শুধুমাত্র কয়েকটি আড়ৎ দেখাগেছে স্থানীয় জলাশয় এবং ডাকাতিয়া নদীতে খাচায় চাষ করা তেলাপিয় এবং পোনা মাছ। এসব মাছ বিক্রি করেই এখন মালিক-শ্রমিকের দৈনন্দিন খরচ মেটাচ্ছে।

রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে শহরের বড় স্টেশন মৎস্য আড়তে গিয়ে দেখাগেছে অধিকাংশ আড়ৎই ফাঁকা। আবার অনেক আড়তে মালিক শ্রমিক থাকলেও জুলছে ওজন দেয়ার দাঁড়িপাল্লা। অবসর সময় অনেকেই গল্প করে কাটাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর পর আড়তে আসছে স্থানীয়ভাবে চাষকৃত তেলাপিয়া মাছ। এগুলোই হাক ডাক দিয়ে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ইলিশের সবচেয়ে বড় আড়তের ইলিশ শূন্য এই চিত্র বছরের মার্চ-এপ্রিল এই দুই মাসেই দেখা মিলে।

খুচরা মৎস্য বিক্রেতা আব্দুল আজিজ জানান, পাইকারী তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি ১২০-২শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া রুই, কাতল ও মৃগেল মাছের পোনা বিক্রি হচ্ছে ১শ’ থেকে দেড়শ টাকা কেজি। মেঘনায় মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকার কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছ আড়তে আসে না।

মৎস্য ব্যবসায়ী নেতা মো. ইকবাল হোসেন চাঁদপুর টাইমসকেক বলেন, জাটকা সংরক্ষণে অভয়াশ্রম চলাকালীন সময়ে পূর্বে অনেক ব্যবসায়ী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করতেন না। কিন্তু এখন ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে সকলেই সচেতন এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছেন। এ কারণে সামান্য তেলাপিয়া মাছ আর পোনা মাছ ছাড়া আড়ৎগুলো শূন্য। আড়ৎগুলো সকাল ৮টা আসার কথা থাকলেও ব্যবসায়ীরা অনেক দেরি করে আসনে। এই দুই মাস লোকসান দিয়ে বসে থাকতে হবে।

আরেক ব্যবসায়ী রহমান প্রধানিয়া বলেন, সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ইলিশ বিক্রি নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। কিন্তু এখনো ইলিশ মাছও নেই ক্রেতাও নেই। তবে ২০১৬ সালের মধ্যবর্তী সময় থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ইলিশ আমদানি ছিলো উল্লেখযোগ্য। অসময়ও ইলিশ পেয়েছেন জেলেরা। এ কারণে সবময় আড়ৎগুলো বেচা-বিক্রি জমঝমাট ছিলো।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সফিকুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, জাটকা সংরক্ষণের জন্য আমরা মৎস্য ব্যবসায়ী, মৎস্যজীবী নেতা ও জেলেদের সচেতন করার কারণে প্রকাশ্যে ও গোপনে ইলিশ বিক্রি বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া নদীতে জেলেরা নামছে না। চাঁদপুর জেলার বাহির থেকে অনেক জেলে জাটকা নিধনের জন্য আসলেও তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুর জেলার মতল উত্তর ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চরআলেকজেন্ডার পর্যন্ত ১শ’ কিলোমিটার ইলিশের অভায়শ্রম ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময় পদ্মা-মেঘনায় সকল ধরনের মাছ আহরন, পরিবহন, মওজুদ ও ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ।

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৩: ৩০ এএম, ০৬ মার্চ ২০১৭, সোমবার
ডিএইচ