ইবাদত-বন্দেগিতে মতলব উত্তরে পবিত্র শবে মেরাজ পালিত

সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে পবিত্র শবে মেরাজের পালন করা হয়েছে।

পবিত্র শবে মেরাজ উপলক্ষে এ বছর বাদ মাগরিব ও বাদ এশা পবিত্র এই দিনটি উপলক্ষে মতলব উত্তর উপজেলা ও ছেংগারচর পৌরসভার বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ দোয়া, মোনাজাতসহ ইসলামী আলোচনা অনুষ্ঠান।

ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে মেরাজের পবিত্র রাত পালন করেছেন। আল্লাহর নৈকট্য লাভে এ রাতে নফল নামাজ, কোরআন তেলায়াত, তাসবিহ তাহলিল ও জিকির আসকার করেন মুসল্লিরা। এই দিন অনেকে নফল রোজাও রাখেন। শবে মেরাজ’ অর্থ ঊর্ধ্ব গমনের রাত। মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী, ২৬ রজব দিনগত রাতে ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করে মহানবী হয়রত মোহাম্মদ (সঃ) আল্লাহ তা’য়ালার সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন। তাই শবে মেরাজ মুসলমানদের কাছে বিশেষ মর্যাদার।

এ উপলক্ষে ছেংগারচর পৌরসভার গৈপুর দর্জিবাড়ি জামে মসজিদ, গৈপুর উত্তর পাড়া জামে মসজিদ, মধ্য আদুরভিটি,ছেংগারচর দর্জি বাজার জামে মসজিদ, ও উত্তর ঠাকুরচর জামে মসজিদে আল্লাহর নৈকট্য লাভে এ রাতে নফল নামাজ, কোরআন তেলায়াত, তাসবিহ তাহলিল ও জিকির আসকার করেন মুসল্লিরা। গৈপুর দর্জি বাড়ি জামে মসজিদে ইসলামী আলোচনা ও আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা মোঃ কাউছার আহম্মেদ। এসময় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ সাইফুল ইসলাম দর্জিসহ বিভিন্ন মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন। উত্তর গৈপুর জামে মসজিদে ইসলামী আলোচনা ও আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ মোঃ ইউনুছ মিয়া। এসময় উপজেলা শ্রমিকরীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামীম প্রধান,মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মারফত আরী মজুমদার ও খোরশেদ আলম প্রধান উপস্থিত ছিলেন। মধ্য আদুরভিটি জামে মসজিদে ইসলামী আলোচনা ও আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান। এসময় মসজিদ কমিটির সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম কাজী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজালাল মুফতি ও মোঃ বাদল ঢালী উপস্থিত ছিলেন। ছেংগারচর দর্জি বাজার জামে মসজিদ-এ ইসলামী আলোচনা ও আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা মোঃ ইব্রাহিম খলিল সালেহী আনন্দপুরী। উত্তর ঠাকুরচর জামে মসজিদে ইসলামী আলোচনা ও আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা মোঃ শাহজাহান।

লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রজনী, যা সচরাচর শবে মেরাজ হিসাবে আখ্যায়িত হয়, ইসলাম ধর্মমতে যে রাতে ইসলামের নবী মুহাম্মদের (সা.) ঐশ্বরিক উপায়ে ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেছিলেন এবং স্রষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, এটি সেই রাত।

ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী, হযরত মুহাম্মদের (সাঃ) নবুওয়াত প্রাপ্তির একাদশ বৎসরের (৬২০ খ্রিষ্টাব্দ) রজব মাসের ২৬ তারিখের দিবাগত রাতে হযরত জিব্রাইল (আঃ)-এর সঙ্গে পবিত্র কাবা হতে পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের উপর আরশে আজিমে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলার দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের সমস্ত কিছুর অপার রহস্য।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম-এর জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা হচ্ছে ‘মেরাজ’। মেরাজ ইসলামের ইতিহাসে এমনকি পুরা নবুওয়াতের ইতিহাসেও এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। কারণ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ছাড়া অন্যকোনো নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি।

ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব হচ্ছে, এই মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের নামাজ মুসলমানদের জন্য ফরজ নির্ধারণ করা হয় এবং দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান নির্দিষ্ট করা হয়।

প্রতিবেদক: খান মোহাম্মদ কামাল, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Share