শিক্ষাঙ্গন

ইন্টারনেটের যুগে সব জায়গাতেই প্রশ্নফাঁস হচ্ছে: শিক্ষামন্ত্রী

ইন্টারনেটের যুগে সব জায়গাতেই প্রশ্নফাঁস হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের উপর আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ছাঁটাই প্রস্তাবে সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। কিন্তু এই মন্ত্রণালয়ে জিপিএ-৫ কেনা-বেচার ঘটনা ঘটে। এগুলো খারাপ কাজ। এসব বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যতক্ষণ এটা ঠিক না করবে, ততক্ষণ টাকা ছাড় করা ঠিক হবে না।

জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জিপিএ-৫ টাকায় বিক্রি হয়। এ ধরনের একটা খবর একটা টিভিতে প্রচার করা হয়েছে। তবে এটা প্রমাণিত হয়নি। তারপরও আমরা বোর্ড থেকে বুয়েটের একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। এছাড়া মন্ত্রণালয় থেকে আরেকটি কমিটি করেছি। যখনই এসব অভিযোগ আসে আমরা গোপন রাখি না। প্রকাশ করি। আমি অভিযোগ অস্বীকার করছি না। তবে প্রতিবেদন এলে বলতে পারবো।

তিনি আরো বলেন, এবার এসএসসির প্রশ্নফাঁস নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। এমনকি মিডিয়াতেও ব্যাপক প্রচার করা হয়েছে। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট পাঁচটি মন্ত্রণালয় ও সব ধরনের নিরাপত্তা সংস্থার মাধ্যমে কমিটি করেছিলাম। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে মাত্র কয়েকটি প্রশ্ন আংশিক, তাও পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পর ফাঁস হয়েছে। সেটি ৩০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্ন ছিল। আমরা গোপন রাখিনি, তদন্ত করে প্রকাশ করেছি।

বিভিন্ন দেশে প্রশ্নফাঁসের উদাহরণ টেনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ভারতের দিল্লীতে কেন্দ্রীয়ভাবে এবং রাজ্যভিত্তিক কিছু পরীক্ষা হয়। এবার কয়েকটি রাজ্যের কিছু পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়েছে। সিঙ্গাপুরেও প্রশ্নফাঁস হয়েছে। ইংল্যান্ডেও প্রশ্নফাঁস হয়েছে। ইন্টারনেটের যুগে এগুলো সব জায়গাতেই হচ্ছে।

ঘুষ নিয়ে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাকে নিয়ে একটা পত্রিকাতে মিথ্যা কথা প্রচার করা হয়েছে। আমি নাকি বলেছি, দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে করার জন্য। আমি উদাহরণ দিয়ে বলেছিলাম। দুর্নীতির জন্য ডিআইএ একটা আখড়া ছিল। আমরা সেটাকে ভেঙে নতুন ফরম্যাটে শুরু করেছি। সেদিন অতীতের উদাহরণ দিয়ে বলেছিলাম, আমরা অভিযোগ পেয়েছি এখানে বিভিন্ন জায়গায় ঘুষ দিতে হতো, ওপর লেবেল পর্যন্তও নাকি দিতে হতো, তখন আমি ওপর লেবেল বলতে আমাকে মিন করেছিলাম। ওপর লেবেল হলে তো আমি মন্ত্রীই। আমি নাকি সব মন্ত্রীকে বলেছি। একথা মোটেই সঠিক না। এটি নিয়ে বারবার আমাকে নির্যাতন করা হয়। আপনারা এমপিরাও এই পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে অনেক সমালোচনা করেন। দয়া করে আপনারা সত্য, ন্যায়বিচার করুন, আপনাদের কাছে সহানুভূতি চাই।

নিজ এলাকায় স্কুল, কলেজের নতুন ভবন ও এমপিওভুক্তি প্রসঙ্গে এমপিদের দাবির ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সাল থেকে ১০ হাজার ৩০১টি নতুন ভবন নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আরও ২ হাজার ১৯৮টি নির্মাণ হবে। এরইমধ্যে ১১ হাজার ৪৪৯টি ভবন নির্মাণ হয়েছে। আরও ১২ হাজার ৪৯৯টি নির্মাণ হবে। মোট ২৩ হাজার ৯৮৯ নতুন ভবন করা হবে। আর এমপিওভুক্তির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী তার বাজেট সমাপনী বক্তৃতায় বলেছেন পহেলা জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে। অর্থ পেলে আমরা পর্যালোচনা করে এমপিওভুক্তির কাজ অব্যাহত রাখতে চাইবো।

অধিবেশনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে বরাদ্দের বিরোধিতা করে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) ৯ জন সদস্য ছাঁটাই প্রস্তাব দেন। এরা হলেন- ফখরুল ইমাম, নূরুল ইসলাম ওমর, সেলিম উদ্দিন, মি. মোহাম্মদ আব্দুল মুনিম চৌধুরী, রুস্তম আলী ফরাজী, রওশন আরা মান্নান, নুরুল ইসলাম মিলন, পীর ফজলুর রহমান। বাজেটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই পর্যন্ত ১৮ হাজার ১৬৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।

নিউজ ডেস্ক
আপডেট সময় ৩:২০ ২৮ জুন২০১৮ বৃহস্পতিবার
কে এইচ

Share