চাঁদপুর

‘ইনোভেশন প্রোগ্রাম নিয়ে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ গর্ব করে’

চাঁদপুরে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের (সমন্বয় ও সংস্কার) সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেছেন, ‘ইনোভেশন এখন ভার্সিটির একটি সাবজেক্টের আওতাভুক্ত হয়ে গেছে। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে মাঠ পর্যায় থেকে উদ্যোক্তাদের নিয়ে কেবিনেট ডিভিশনে কাজ করা হবে। ইনোভেশন প্রোগ্রাম নিয়ে সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ গর্ব করে।’

একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের আওতাধীন চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইনোভেশন সার্কেল (২য় পর্ব) চাঁদপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এতে প্রধান অতিথির তিনি এসব কথা বলেন।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা ৩০ পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ইনোভেশন সার্কেলের আয়োজন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ রুহুল আমিন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) চাঁদপুর জেলা প্রশাসন যেভাবে নাগরিক সেবা দিচ্ছে তা দৃষ্টান্তমূলক।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরসহ চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তর অংশের ৭ জেলার জেলা প্রশাসক।

প্রত্যেক জেলা প্রশাসকই তাঁদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে নিজ নিজ জেলায় গত এক বছরে কী কী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং আগামী বছর নতুন করে আরও কী কী উপস্থাপন করতে চান তা মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরেন।

এ ছাড়া স্লাইড উপস্থাপন শেষে প্রতি জেলা থেকে একজন উদ্যোক্তা ওই জেলার উদ্ভাবিত পাইলট মডেল সকলের সামনে উপস্থাপন করেন।
তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিক সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন নতুন আইডিয়া উপস্থাপনের মাধ্যমে চাঁদপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইনোভেশন সার্কেল অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য সচিব উপরোক্ত কথা বলেন। চাঁদপুর সহকারী কমিশনার ভুমি অভিষেক দাসের সঞ্চালনায় জনপ্রশাসনে উদ্ভাবন চর্চা-অগ্রগতি, সম্ভাবনা ও করণীয় বিষয়ে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট মানিক মাহমুদ।

সূচনা বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল।

সভাপতির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. রুহুল আমীন। তিনি বক্তব্যে বলেন, অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য আসলেও পুলিশের কার্যক্রম বিষয়ে নতুন কোন আইডিয়া তুলে ধরা হয়নি এবং আদালতের মামলা জটিলতায় কিভাবে মানুষ দ্রুত সেবা পাবে সেসব বিষয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগে এ বছর ফেসবুকের মাধ্যমে ১হাজার ৯শ’ ৮৬ সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সকলের অংশ গ্রহণ ও উপস্থিত হওয়ার কারণে তিনি সকলকে চট্টগ্রাম বিভাগের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।

জেলা ভিত্তিক ইনোবেশন সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল, ফেনির জেলা প্রশাসক আমিনুল আহসান, নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক বদর মুনীর ফেরদৌস, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক সামছুল আরেফীন, বি-বাড়িয়া জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান, চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) মোহাম্মদ আব্দুল হাই, লক্ষ্মীপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মুর্শিদুল রহমান। উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে বক্তব্যে রাখেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ.এস.এম. দেলওয়ার হোসেন, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল মতিন মিয়া, হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক আঃ রশিদ মজুমদার, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বিএম হান্নান, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, সময় টিভির স্টাফ রিপোটার ফারুক আহমেদ, মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মানিক পাটওয়ারী প্রমুখ।

ড. আনিছুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, ইলিশ রক্ষায় ৩টি কাজ করলে আমার সফল। একটি হচ্ছে: মা ইলিশ রক্ষা, দ্বিতীয়ত জাটকা রক্ষা এবং তৃতীয়ত হচ্ছে অভিযানগুলো সফল করা।

এসব কাজ করার কারণে আমরা সুফল পাচ্ছি। এখন আমাদেরকে ইলিশ রক্ষা করতে হবে। ইলিশ মাছ ৭২ কিলোমিটার ¯্রােতের বিপরীতে চলতে পারে। দেশের আভ্যন্তরের নদীগুলো নিরাপদ হওয়ার কারণে ইলিশ মাছ এখন ছোট নদীগুলোতেও চলে আসছে। ইশিল নিয়ে প্রশাসনের পাশাপাশি সংবাদিকদেরও ব্যাপক ভুমিকা ছিলো।

ফেসবুকের মাধ্যমে নাগরিক সমস্যা সমাধান ও চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন লাইসেন্স এর অনলাইন আবেদন বিষয়ে স্লাইড উপস্থাপন করেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ আব্দুল হাই। উৎপাদনমুখী টেকসই সমবায় সমিতি গঠনের মাধ্যমে কর্ম সংস্থান সৃষ্টি বিষয়ে বক্তব্য রাখেন মাগুরা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা বিরাজ মোহন কুন্ডু।

ইনোভেশন সার্কেলের নির্ধারিত সূচির ফাঁকে চাঁদপুর জেলার ইতিহাস ঐতিহ্য এবং কার্যক্রমের ভিডিও ফুটেজ প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে এসব জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা অনলাইনে নাগরিক সেবা, পর্যটন শিল্প, উৎপাদনমুখী টেকসই সমবায় সমিতি গঠনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নাগরিক সমস্যা সমধানের বিষয়ে বিভিন্ন পদ্ধতি উপস্থাপন করেন।

বিভিন্ন বিষয়ে নতুন উদ্ভাবনী কার্যক্ররে স্বীকৃতিস্বরূপ বেশ ক’জন কর্মকর্তাকে প্রধান অতিথি সনদপত্র প্রদান করেন।

করেসপন্ডেন্ট : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২:০০ এএম, ২৪ নভেম্বর ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

Share