দরিদ্রদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ইনসুলিন ও অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী ওষুধের সুবিধা নিশ্চিত করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও গবেষণায় বিনিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সদিচ্ছাকে সচল করতে হবে।’
ডায়াবেটিসের বৈশ্বিক রাষ্ট্রদূত হিসেবে পর্তুগালের লিসবনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ডায়াবেটিস কংগ্রেস-২০২২-এ প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন। খবর- বাসস।
শেখ হাসিনা বলেন,‘ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিক অর্থায়নের কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া ডায়াবেটিস ও সংশ্লিষ্ট রোগে আক্রান্ত প্রত্যেকের জন্য সঠিক চিকিৎসা ও যত্ন পৌঁছে দিতে একটি শান্তির বিশ্ব থাকা দরকার।’
তিনি বলেন,‘কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি উন্মোচিত করেছে। ডায়াবেটিস ও অন্যান্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে বৈষম্য মোকাবিলায় সে অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে।’
সমস্ত ডায়াবেটিস রোগী এবং সেবাদানকারীদের পক্ষে তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবিলম্বে অবসান ঘটানোর জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন,‘আমাদের অবশ্যই আন্তর্জাতিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে। জনগণের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ ব্যবহার করতে হবে।’
আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিশ্ব স্বাস্থ্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে গ্লোবাল ডায়াবেটিস কমপ্যাক্ট বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি উল্লেখ করেন যে ডব্লিউএইচও বলেছে, বিশ্বে প্রায় ৪২২ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছে এবং এই রোগে প্রতি বছর প্রায় ১৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। বাংলাদেশে শিশুসহ ৮.৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিস এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অসুস্থতা নিয়ে বসবাস করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তবে ডায়াবেটিস থেকে জটিলতা ও অকাল মৃত্যু প্রতিরোধ করা যেতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাবারের মতো কিছু জীবনযাত্রার পরিবর্তন অনেক পার্থক্য করতে পারে। সঠিক ওষুধ ও সতর্কতার মাধ্যমে একজন ডায়াবেটিস রোগী নিয়মিত জীবন উপভোগ করতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক রোগ-এনসিডিকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।’
তিনি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ,যত্ন এবং নিরাময় প্রচারের জন্য আইডিএফের কাজের প্রশংসা করে বলেন,‘এটি ২৪০টি জাতীয় ডায়াবেটিস সমিতিকে এক ছাতার নিচে একত্রিত করেছে এবং এটি সত্যিই একটি অনন্য অর্জন।’
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের একটি রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে ১৪ নভেম্বরকে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে আইডিএফ-এর সঙ্গে বাংলাদেশের পূর্ববর্তী সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন। বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য প্রধান এনসিডি থেকে অকাল মৃত্যুহার এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,তার সরকার একটি গণমুখী স্বাস্থ্য নীতি বাস্তবায়ন করছে যা কমিউনিটি সচেতনতার মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দেয়। সরকার সম্প্রতি দেশের সরকারি হাসপাতালে ডায়াবেটিস রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সারাদেশে ১৮ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রশিক্ষিত পেশাদার এবং ডায়াবেটিস পরীক্ষার সুবিধা রয়েছে। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন দেশব্যাপী ডায়াবেটিস যত্ন ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।’
৬ ডিসেম্বর ২০২২
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur