ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী 

পঁচাত্তর পরবর্তী বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৈচিত্র্যময় ও বহুমাত্রিক জীবন নিয়ে চিত্রশিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশের আঁকা দেড় শ ফুট আকারের চিত্রকর্মের প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। 

জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঘাতকেরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে আমাদের মাঝ থেকে কেড়ে নিয়েছিল। সে জন্য ২১ বছর এই জাতির জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। আর এ ২১ বছর একটা চেষ্টাই করা হয়েছিল যেন, জাতির পিতার নাম না থাকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নামটাই মুছে ফেলা……সেটা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস হোক আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস হোক। সবকিছু থেকেই তাঁকে সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলার একটি চেষ্টা। 

শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তান যেমন করেছে, পঁচাত্তরের পর যারা স্বাধীনতা বিরোধী তারাও করেছেন। কিন্তু আমাদের যারা শিল্পী-সাহিত্যিক আছেন, তারা তাদের লেখনীর মধ্য দিয়ে, তাদের তুলির আঁচড়ে, কবিতার মাধ্যমে, গানের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে এই নামটি চিরভাস্বর করে রেখেছেন। সে জন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। 

সরকার প্রধান বলেন, ‘একটি প্রতিকূল অবস্থার মাঝেও প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আমাদের শিল্পী, সাহিত্যিক, কবি থেকেই শুরু করে সকলেই কাজ করেছেন। আর আমরা রাজনৈতিকভাবেও চেষ্টা চালিয়েছি। আমাদের দেশের প্রতিটি অর্জন ও সংগ্রামে আমাদের শিল্পীদের অনেক অবদান রয়েছে।’ 

 ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবন পট’ এর চিত্রকরের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই অনন্য সৃষ্টিকর্ম আমাদের শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে যে তথ্যগুলি প্রকাশ হচ্ছে সেটা কিন্তু আমাদের অনেক কিছু জানায়।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্পী বিকাশ স্বাধীনতার সংগ্রাম থেকে শুরু করে সবকিছু চিত্রকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। আমি এবং আমার ছোট বোন রেহানা সত্যিই বিস্মিত হয়েছি। এটি একটি অসাধারণ শিল্পকর্ম।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটিকে এমনভাবে প্রদর্শন করা উচিত, যেন সকল মানুষ এটিকে দেখতে পাই। শুধু এয়ারপোর্ট না, টুঙ্গিপাড়ায় এমন একটা প্রদর্শনীর ব্যবস্থা হবে, এমন একটা জায়গায় করার চেষ্টা করছি। যারা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে যান, তারাও এই চিত্রকর্মটি দেখতে পারেন। তার জন্য একটা স্থান তৈরি করা হবে।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই চিত্রকর্মটি অনলাইনেও যেন মানুষ দেখতে পারে, সে ব্যবস্থাটি আমরা করব। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, সেখানে আমরা এটিকে স্থাপন করব। এই চিত্রকর্মটি যেন বাংলাদেশের সব জায়গায় প্রদর্শিত হয়, সে ব্যবস্থা করব। সেই সঙ্গে আমাদের প্রবাসে যারা আছেন, তাদের দেখার ব্যবস্থা করব।’ 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, চিত্রকর্মটির শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশ, অভিনেতা আফজাল হোসেন প্রমুখ। 

Share