এই সফরের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে কোনো ফরম্যাটেই জয় ছিল না বাংলাদেশের। এবার প্রথম ওয়ানডে জিতেই ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে টাইগাররা। এবার সিরিজ জিতে আরেকটি ইতিহাসের হাতছানি।
বোলাররা অর্ধেক কাজ সেরে রেখেছেন। বিশেষ করে তাসকিন আহমেদ তো বল হাতে রীতিমত আগুন ঝরিয়েছেন, একাই নিয়েছেন ৫ উইকেট।
তার এমন বোলিংয়ে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ৩৭ ওভারে ১৫৪ রানেই গুটিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অর্থাৎ বাংলাদেশের সিরিজ জিততে দরকার ১৫৫ রান।
সিরিজে এখন ১-১ সমতা। সেঞ্চুরিয়নে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেটি তাই পরিণত হয়েছে অঘোষিত ফাইনালে। আজ যে দল জিতবে, তারাই ট্রফি হাতে তুলবে।
এমন এক ম্যাচে টসভাগ্য সহায় হয়নি বাংলাদেশের। টাইগারদের ফিল্ডিংয়ে পাঠিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওপেনিং জুটিতে ভালো একটি সূচনাও পেয়েছিল স্বাগতিকরা।
কুইন্টন ডি কক আর জানেমন মালান ঝড়ো সূচনা করেন। ৪১ বলে তাদের ৪৫ রানের জুটিটি অবশেষে ভাঙেন মেহেদি হাসান মিরাজ। টাইগার অফস্পিনারকে তুলে মারতে গিয়ে লংঅফে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ হন ডি কক (৮ বলে ১২)।
এরপরই তাসকিন ঝলকে হঠাৎ ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। টানা দুই ওভারে দুই উইকেট তুলে নেন তাসকিন। উইকেট শিকারের উৎসবে যোগ দেন সাকিব, শরিফুলরা। বিনা উইকেটে ৪৬ থেকে এক ঝটকায় ৫ উইকেটে ৮৩ রানে পরিণত হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
১৩তম ওভারে এসে কাইল ভেরনানকে (৯) তুলে নেন তাসকিন। এই উইকেটে অবশ্য কিছুটা ভাগ্যের সহায়তাও ছিল। তাসকিনের ওয়াইড ডেলিভারি টেনে উইকেটে এনে বোল্ড হন ভেরনান।
এক ওভার পর এসে তাসকিন তার দ্বিতীয় শিকার ধরেন। এবার আর ভাগ্যের সাহায্য নয়, দারুণ এক ডেলিভারিতে মালানকে (৩৯) উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানান টাইগার গতিতারকা।
তার পরের ওভারে আরও এক উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে (২) এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন সাকিব। তার আবেদনে আম্পায়ার আঙুল তুলে দিলে বাভূমা যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ হয়নি।
১৯তম ওভারের প্রথম বলেই প্রোটিয়া ব্যাটিংয়ের আরেক ভরসা ভ্যান ডার ডাসেনকে (৪) আউট করেন শরিফুল। ডাসেন আকাশে বল ভাসিয়ে দিলে পয়েন্টে দারুণ এক ক্যাচ নেন মিরাজ।
৮৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর কিছুটা সময় ধরে খেলেছিলেন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস আর ডেভিড মিলার। ৩৮ বলে তাদের জুটিতে ওঠে ২৪ রান। এ সময় আবারও হাজির তাসকিন।
টাইগার গতিতারকার বেরিয়ে যাওয়া সুইং ডেলিভারি জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে ভুল করেন প্রিটোরিয়াস (২০)। বল এজ হয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে।
২৯তম ওভারে ফের জোড়া আঘাত তাসকিনের। এবার তিন বলের ব্যবধানে ডেভিড মিলার (১৬) আর কাগিসো রাবাদাকে (৪) উইকেটরক্ষক মুশফিকের ক্যাচ বানান তিনি। পূরণ করেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফাইফার।
সবমিলিয়ে ৯ ওভারে ৩৫ রান খরচায় ৫ উইকেট নেন তাসকিন। সমান ওভারে ২৪ রান দিয়ে ২ উইকেট সাকিবের। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদি মিরাজ আর শরিফুল।