ইতালি থেকে বাংলাদেশ গমনে সব ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে গোটা ইতালি এখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিকভাবেও চরম ক্ষতির পথে। দুদিন আগেও এমিরেটসসহ বেশ কয়েকটি ফ্লাইট চালু ছিল।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতি অবনতির কারণে ইতালি সরকার রেড এলার্ট জারি করার পর আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত দেশটির সব ফ্লাইট বন্ধ থাকবে। ফলে ক্রমেই বিশ্ব থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে শিল্প উন্নত দেশটি।
এদিকে বাংলাদেশ সরকার আগামী ১৬ মার্চ থেকে নতুন করে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করেছে। গতকাল এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি রোম দূতাবাসের প্যাডে দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রোম দূতাবাস। এর আগেই প্রায় ৭০ ভাগ ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি যাত্রী শূন্য হয়ে গেছে।
বিমানবন্দরে কর্মরত এমিরেটসের এক কর্মকর্তা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে আমেরিকা, কানাডাসহ বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তাই গত দুই সপ্তাহ ধরে বিমানবন্দরে তেমন কোনো যাত্রী নেই। ইউরোপের ভেতরে কিছু ফ্লাইট চালু থাকলেও এই ধারাবাহিকতার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
এদিকে বিমান সচরাচর না থাকায় হাজার হাজার যাত্রী চরমভাবে ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে। এ কারণে ট্রাভেল এজেন্সিগুলো বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে নেক ট্রাভেলসের সেলস ম্যানেজার ওমর ফারুক বলেন, সরকারের বিধিনিষেধ হিসেবে আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত ট্রাভেলস এজেন্সি বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে সব ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে আমরা চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়ে আছি। রোম ছাড়াও আমাদের প্রায় দেড় শতাদিক সাব এজেন্সি রয়েছে তারা আমাদের হয়ে কাজ করছে।
তিনি বলেন, তাদের কাছে আমাদের প্রায় দেড় লক্ষ ইউরো আটকে আছে। খুব শিগগিরই যদি করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে না আসে প্রবাসীরা চরম ক্ষতির মধ্যে পড়ে যাব। ইতোমধ্যে লোকসান গুনা শুরু হয়ে গেছে। গৃহবন্দী রয়েছে অনেকে।
বর্তমান বিশ্বে এখন এক আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। বিশ্বের ১৫২টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৮ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে মারা গেছে ৫ হাজার ৮৩৬ জন।
করোনায় আক্রান্ত ৭৫ হাজার ৯২২ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৮২৪ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১৯৯ জনের। সেখানে নতুন করে আর কারো আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে নতুন করে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চীনের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ইতালিতে। সেখানে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ১৫৭ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১ হাজার ৪৪১ জন
বার্তা কক্ষ, ১৫ মার্চ ২০২০