ফরিদগঞ্জে ইজিবাইকের অতিরিক্ত লাইসেন্স ফি নির্ধারণ,বিপাকে মালিক-শ্রমিকরা

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌরসভা ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য ইজিবাইকের লাইসেন্স ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে ১৪,৪০০ টাকা। অস্বাভাবিক ফি নির্ধারণে দুঃচিন্তায় পড়েছেন মালিক এবং শ্রমিকরা। এর প্রভাব গিয়ে পড়বে যাত্রী সাধারণের ওপর। প্রতিকার চেয়ে শ্রমিক-মালিক পক্ষ জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন।

অবশেষে ফরিদগঞ্জ পৌরসভা একটি চমৎকার উদ্যোগ নিয়েছেন। পৌরসভায় হঠাৎ করে হু-হু করে বেড়ে যাওয়া ইজিবাইককে নিয়ন্ত্রনে আনার ক্ষেত্রে এটা একটা ভালো উদ্যোগ।

কিন্তু ইজিবাইকগুলোকে লাইসেন্স এর জন্য ব্যাংক ড্রাফট ১২,০০০ টাকা, ভ্যাট-১৫% (১,৮০০ টাকা), আয়কর- ৫০০ টাকা, আবেদন ফি ১০০ টাকা করে মোট ১৪,৪০০ টাকা নির্ধার করা হয়েছে। এতো টাকা দিয়ে লাইসেন্স করা মালিকদের পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। তাছাড়া চালকদের দৈনিক জমা বেড়ে যাবে।

এ বাড়তি টাকার ভোজা গিয়ে পড়বে যাত্রীদের উপর। গত ২২ সেপ্টেম্বর মালিক শ্রমিকরা লাইসেন্স ফি কমানোর জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেন।

সেখানে তারা উল্লেখ করেন- ‘দীর্ঘ দেড় বছর লকডাউনে পরিবহন খাত বন্ধ থাকায় নিম্ন আয়ের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যান্ত নাজুক। একই কারণে অনেকে ঋণগ্রস্থ হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ইজিবাইকের জমা কমে যাওয়ার পাশাপাশি এর রক্ষনাবেক্ষন ব্যায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় আমাদের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা অত্যান্ত কষ্টসাধ্য।’

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভা ইজিবাইকের লাইসেন্স বাবদ নিচ্ছে ৫ হাজার টাকা, শাহরাস্তি পৌরসভা নিচ্ছে ৩ হাজার টাকা। মতলব ও কচুয়া পৌরসভায় এখনো শুরু করেনি।

এ পৌরসভাগুলো ‘ক’ শ্রেণির হয়ে লাইসেন্স ফি কম নিচ্ছে অথচ ফরিদগঞ্জ পৌরসভা ‘খ’ শ্রেণি হয়েও কয়েকগুণ বেশী নির্ধারণ করা হয়েছে। অপরদিকে দৈনিক পৌরকর সব পৌরসভায় ১০ টাকা হলেও ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় দিতে হয় ১৫ টাকা।

ইজিবাইক চালক মো. সোহাগ বলেন,‘ভাই আমরা গরীব মানুষ। রুজি নাই। কোনো রকম কষ্ট করে চলি। এতো টাকা কোথায় থেকে দিমু?

ইজিবাইক মালিক আব্দুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,‘লাইসেন্স হোক। কিন্তু এত টাকা কেন?’

বিশিষ্ট আওয়ামীলীগ নেতা আকবর হোসেন মনির বলেন,‘একটি পৌরসভায় লাইসেন্স বিহীন পরিবহন থাকা যুক্তিহীন কিন্তু ইজিবাইকের লাইসেন্স ফি ১৪,৪০০ টাকা সেটাও মানা যায় না। আমাদের অঞ্চল এখনো কৃষি নির্ভর। ফরিদগঞ্জ এখনো সে অর্থে নগরায়ন হয়নি। চাঁদপুরের অন্যান্য পৌরসভার সাথে সমন্বয়ন করে এবং চালকের আয়ের উপর নির্ভর করে ফি নির্ধারণ করলে সুবিধা হবে। শ্রমিকদের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। ’

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সচিব মো. খোরশেদ আলমের সাথে কথা বললে তিনি জানান,‘বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কথা বলি। আপনি রবিবার- সোমবারের দিকে অফিসে আসেন।’

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী বলেন,‘এ বিষয়ে ক্যাশিয়ারের সাথে কথা বলেন।’

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ক্যাশিয়ার গিয়াস উদ্দিন বলেন,‘পৌরসভার নিয়মিত সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখানে কেউ দ্বিমত করেনি। পরবর্তীতে কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে বসে পুনঃনির্ধারণ করা হবে।’

৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন টিটু বলেন,‘সভায় লাইসেন্সের বিষয়ে কথা হয়েছে কিন্তু ১৪,৪০০ টাকা কখন নির্ধারণ করা হয়েছে, আমি জানি না।’

প্রতিবেদকঃ শিমুল হাছান, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

Share