প্রথম ধাপের স্থগিত ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, চলবে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এছাড়াও আজ দেশের ৯টি পৌরসভা ও স্থানীয় সরকার পরিষদের কয়েকটি উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
করোনা মহামারির কারণে স্থগিত প্রথম ধাপের ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ৪৪ জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ইউপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দলীয় প্রতীকের এ ভোটে বিএনপি না থাকলেও আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি দল অংশ নিয়েছে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বিএনপিরও কয়েকজন নেতাকর্মী।
সুষ্ঠুভাবে এসব নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল রবিবার প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছে গেছে। ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে মাঠে নিয়োজিত আছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. হুমায়ন কবীর খোন্দকার। রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমরা যে প্রস্তুতি নিয়েছি তাতে আশা করতে পারি ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচনী এলাকায় কোনও সাধারণ ছুটি থাকছে না। তবে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছুটির আওতায় থাকবে। নাগরিকরা সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে ছুটি নিয়ে ভোট দিতে পারবেন।
১৬১টি ইউপিতে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় একটি ইউপি নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাচনে ১৬০টি ইউপির মধ্যে ৪৪টিতে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের সকলেই আওয়ামী লীগ মনোনীত। তবে এসব ইউপিতে সাধারণ সদস্য এবং সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলা ট্রিবিউনের নোয়াখালী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আজ সোমবার নোয়াখালীর কবিরহাট পৌরসভা, হাতিয়ার সাতটি ও সুবর্ণচর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন ভোটগ্রহণ চলছে। তবে, কবিরহাট পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামীলীগ প্রার্থী জহিরুল হক রায়হান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় শুধুমাত্র কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারের চকরিয়া ও মহেশখালী পৌরসভা এবং চার উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে। প্রচারণার সময় কিছু এলাকায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও তা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন অনুযায়ী, ভোট গ্রহণ শুরুর ৩২ ঘণ্টা আগে প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করতে হয়। সে হিসাবে ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টায় প্রচার কাজ বন্ধ হয়েছে। এ সময়ের পর প্রার্থী বা সমর্থকদের কেউ কোনও ধরনের প্রচারণা চালাতে পারবেন না।
নির্বাচনী এলাকায় যেসব যান চলাচল বন্ধ
১৮ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত থেকে ২১ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়া ভোটের আগের দিন ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা হতে ভোটের দিন ২০ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় ট্রাক ও পিকআপ, লঞ্চ, স্পিডবোট এবং ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়া জরুরি সেবাসহ অন্যান্য পরিবহন চলাচল করতে পারবে।
দেশে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ইউপিতে কয়েক ধাপে ভোট গ্রহণ হবে। গত ৩ মার্চ প্রথম ধাপে ৩৭১টি ইউপির ভোটের তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। পরে করোনা পরিস্থিতির কারণে ভোট স্থগিত করা হয়। স্থগিত ভোটের মধ্যে গত ২০ জুন ২০৪টি ইউপির ভোট অনুষ্ঠিত হয়।