ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নে এমপিরা থাকছেন না। প্রাধান্য পাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। তৃণমূল নেতৃবৃন্দ একজন করে চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করে কেন্দ্রে পাঠালে কেন্দ্র সেটা অনুমোদন করবে।
জানা যায়, মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি)আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার/পৌর নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ওইদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়নে এমপিরা থাকছেন না।
গত পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে একক প্রার্থী মনোনয়নে তৃণমূলের কমিটিতে ছিলেন সংশ্লিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, উপজেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং পৌরসভার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য পৌরসভার স্থলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ছয়জন মিলে একজন দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনীত করে কেন্দ্রে নাম পাঠাবেন।
এরপর স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থিতা চূড়ান্ত করে দলের প্রতীক (নৌকা) বরাদ্দ দেবে।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ২৩৪টি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী মনোনয়নে জেলা, উপজেলা ও সংশ্লিষ্ট পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার জাতীয় সংসদ সদস্যকে(এমপি) দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু ওই নির্বাচনে এমপিদের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। এমপিদের হস্তক্ষেপে একক মেয়র প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়।
বিশেষ করে বিদ্রোহী প্রার্থীদের পেছনে দলের বেশ কিছু এমপির সমর্থন, সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ রয়েছে।
২০ থেকে ২২ জন এমপির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত ওই এমপিদের বিরুদ্ধে এবং দলের যেসব নেতা বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে আওয়ামী লীগের।
সূত্র জানায়, এ প্রেক্ষাপটে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নে এমপিদেরকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে না। মনোনয়ন প্রক্রিয়া থেকে তাদেরকে দূরে রাখা হচ্ছে। ইউপি নির্বাচনে এমপিদের পরামর্শ না নেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ইউপিতেও চেয়ারম্যান পদে চূড়ান্ত প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষমতা থাকছে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে। তিনি বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিটি ইউপির জন্য একজন করে চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করবেন এবং প্রতীক বরাদ্দ দেবেন।
তবে তৃণমূল থেকে একজন করে প্রার্থীর নাম পাঠানোর কথা বলা হলেও একজনের নাম পাঠাতে ব্যর্থ হলে একাধিক প্রার্থীর নাম পাঠাতে পারে। এর মধ্য থেকে একজনকে মনোনীত করা হবে।
আগামী মার্চে সাড়ে চার হাজার ইউপিতে কয়েক ধাপে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষ্যে ফেব্রুয়ারিতে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
স্থানীয় সরকার আইন সংশোধনের পর পৌরসভার মতো ইউপিতেও চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হবে। তবে সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য (মেম্বার) পদগুলোতে ভোট আগের মতোই নির্দলীয়ভাবে হবে।