মসজিদ ওয়কফকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৪ জন মুসল্লী আহত হয়েছে। ঘটনাটি ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকালে চাঁদপুর সদর উপজেলার ২নং আশিকাটি ইউনিয়নের দক্ষিণ রালদিয়া আদর্শ মুসলিম পাড়া জামে মসজিদে।
এ ঘটনায় আশিকাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ বিল্লাল খান, মুসল্লী মোঃ জামাল খান, মোঃ সুমন খান ও নাজমা বেগম গুরুতর আহত হয়েছে। বর্তমানে আহতরা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল ও বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মোঃ শফিক কাজী ও তার ছেলে সুলতান কাজী, নজরুল কাজী, মুকুল কাজী এবং শফিক কাজীর ভাই মোহাম্মদ কাজী গংরা দক্ষিণ রালদলিয়ায় আদর্শ মুসলিম পাড়া জামে মসজিদ ওয়াকফ ও করার বিষয় নিয়ে স্থানীয় মুসল্লিদের সাথে প্রতিনিয়ত বাক-বিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। ২০০৫ সালে স্থানীয় এলাকাবাসী সকলে মিলে মসজিদটি নির্মাণ করে। এত বছর হওয়ার পরও মসজিদ ওয়াকফ করার বিষয় নিয়ে পায়তারা করছে সফিক কাজী ও তার দলবল।
এদিকে দক্ষিণ রালদিয়া আদর্শ মুসলিম পাড়া মসজিদকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জটিলতা তৈরি করছেন শফিক কাজী গংরা। শুধু তাই নয় শফিক কাজীর স্ত্রী মসজিদের ভিতরে প্রবেশ করে ইমামকে মারধরের ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া আরেক মোয়াজ্জেম কে রড চুরির অপবাদ দিয়ে মসজিদ থেকে চাকরিচ্যুত করে। তাদের এই কর্মকাণ্ডে স্থানীয়রা বারবার প্রতিবাদ করল তারা কারো কথার তোয়াক্কা করেনি বরং মসজিদে আগত মুসল্লিদের কে হুমকি-ধমকি দিয়ে মসজিদের না আসার জন্য আহ্বান করে।
অন্যদিকে ১৯ এপ্রিল সোমবার বিকালে লালদিয়া মসজিদের ইমামের পাখা চালানোর কে কেন্দ্র করে মুসুল্লিদের সাথে এক প্রকার বাকবিতন্ডা ঘটে শফিক কাজি ও তার দলবল দের সাথে। এসময় তারা তাদের নিজেদের মসজিদ বলে দাবি করে মুসল্লিদের সাথে খারাপ আচরণ করে। এক পর্যায়ে স্থানীয় মুসল্লী সুমন খান প্রতিবাদ করলে তার উপর চড়াও হয়ে মসজিদে তাকে মারধর করে।
অপরদিকে মসজিদের পাশেই সেকান্তর খানের ছেলে বিল্লাল খান মসজিদের কবরস্থানের জন্য শফিক কাদের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে। একপর্যায়ে কবরস্থানের জন্য জমিটি ভরাট করার পরও কবরস্থানের জন্য জমিটি দিচ্ছে না শফিক কাজীরা।
মসজিদ ওয়াকফ, কবরস্থানের জমি ও মসজিদে মারধর সহ বিভিন্ন প্রেক্ষাপট নিয়ে গত ২২ এপ্রিল শুক্রবার স্থানীয় মুসল্লিদের সাথে বসার কথা ছিল শফিক কাজী ও তার পরিবারের। বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে বসার পূর্বেই গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আশিকাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ বিল্লাল খানের সাথে তর্কে জড়ায় শফিক কাজী তার ভাই ও ছেলেরা। এক পর্যায়ে শফিক কাজি এবং তার দলবল নিয়ে বিল্লাল খানের উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়।
এতে বিল্লাল খানের মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। বিল্লাল খানকে বাঁচাতে এসে হামলায় গুরুতর আহত হয় মুসল্লি মোঃ জামাল খান, মোঃ সুমন খান ও নাজমা বেগম। স্থানীয় লোকজনের আহতদেরকে উদ্ধার করে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল তাদেরকে ভর্তি করানো হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে সাথে সাথে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলী হোসেন মিয়াজী, প্রচার সম্পাদক মোঃ আব্দুস সামাদ টুনু, সহ প্রচার সম্পাদক মোঃ মনির গাজী, সদর উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক মোঃ শিমুল হাসান শাবনু সহ কল্যাণপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, আশিকাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ১৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ নেতৃবৃন্দ।
এদিকে হামলায় গুরুতর আহত মোঃ বিল্লাল খান বলেন পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভুল বিভ্রান্তমূলক তথ্য ছড়াচ্ছেন শফিক কাজী ও তার সঙ্গীরা।
মসজিদের বিষয় নিয়ে হামলার প্রতিবাদে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন আশিকাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগ সহ অন্যান্যরা।
প্রতিবেদক:শরীফুল ইসলাম,২৪ এপ্রিল ২০২১