Home / চাঁদপুর / চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে নতুন ৪৭ নার্স : আশার আলো দেখছেন রোগীরা
Chandpur General Hospital
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ফাইল ছবি

চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে নতুন ৪৭ নার্স : আশার আলো দেখছেন রোগীরা

আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ৪৭ জন নতুন সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের পর থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসাসেবার মান অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

নতুন নার্স নিয়োগের কারনে আগের তুলনায় এখন রোগীরা সময়মত সঠিক সেবা পাচ্ছেন বলে বিভিন্ন রোগীদের কাছ থেকে জানা গেছে।

বেশ কয়েক মাস ধরে লক্ষ্য করা যায়, হাসপাতালের জরুরী বিভাগসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড গুলোতে নার্সদের সংখ্যা বেড়েছে। আগে যেখানে ৩/৪ জন নার্স দায়িত্ব পালন করতো দেখা গেছে সেখানে এখন ৫/৬ জন নার্স দায়িত্ব পালন করছেন। খবর নিয়ে জানাযায়, ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর সরকারি ভাবে এ হাসপাতালটিতে সর্বমোট ৪৭ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ দেয়া হয়। দায়িত্ব পাওয়ার ক’মাস পর থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, পুরুষ ওয়ার্ড, মহিলা ওয়ার্ড, গাইনী ওয়ার্ড, শিশু ওয়ার্ড ও পেইং কেবিন ব্লকসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে পূর্বের সিনিয়র নার্সদের পাশাপাশি নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত নার্সরা তাদের কর্তব্য পালন করছেন।

আগের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যেখানে ৭/৮ জন ব্রাদার ডিউটি করতো আর এখন সেখানে বিভিন্ন সিপটে ১০/১২ জন ব্রাদার প্রতিদিন ডিউটি করে থাকেন। আগে রাতের বেলায় জরুরি বিভাগে একজন মাত্র ব্রাদার ডিউটি করতো। তখন দেখা গেছে একজন ব্রাদার ডিউটি করতে তাকে অনেক হিমশিম খেতে হতো। ওইসময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে একসাথে কয়েকজন রোগী আসলে একজন ব্রাদারের পক্ষে রশিদ কাটা, রেজিস্টার সংরক্ষণ ও রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু নতুন নার্স নিয়োগের পর থেকে জরুরি বিভাগে পুরনো সিনিয়র ব্রাদারের সাথে ৩/৪ জন করে নার্স যোগ করা হয়েছে। এ কারনে এখন রোগীদেরকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়না। তারা সহজেই ব্রাদারদের কাছে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন।

দেখা যায় হাসপাতালের এ বিভাগটিতে জেলার বিভিন্নস্থান থেকে মানুষজন চিকিৎসাসেবা নেয়ার জন্য প্রথমে হাসপাতালের জরুরী বিভাগটিতে যায়। সড়ক দুর্ঘটনা, মারামারি, আগুনে পোড়া, হাটএটাক, কিংবা পানিতে পড়া শিশুদেরকে নিয়েও মানুষজন সর্বপ্রথমে জরুরী বিভাগেই যান। এ ক্ষেত্রে দেখাযায় ডিউটিরত ব্রাদাররাই চিকিৎসকের আগে রোগীকে সেবা প্রদান করেন।

এছাড়াও হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ড, মহিলা ওয়ার্ড, গাইনী ওয়ার্ড, শিশু ওয়ার্ড ও পেইং কেবিন ব্লকসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে পূর্বের সিনিয়র নার্সদের পাশাপাশি বিভিন্ন শিপটে নতুন নার্সরা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ওইসব ওয়ার্ড গুলোতে বিভিন্ন শিপটে ৩/৪ জন করে নার্স যোগ করা হয়েছে। পুরনো সিনিয়র নার্সদের সাথে তারাও প্রতিদিন নিয়মিত রোগীদেরকে সেবা দিয়ে চলেছেন।

সরকারি এ হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা অনেক পুরনো বেশ ক’জন রোগীদের সাথে কথা বলে নার্সদের চিকিৎসাসেবার মান সম্পর্কে জানা যায়। এ

রমধ্যে দক্ষিন বালিয়ার আছিয়া বেগম, তরপুরচন্ডীর আবুল হোসেন, ছোট সুন্দর গ্রামের ফিরোজ মিয়া, ফরিদগঞ্জের রওশনারা বেগম, আঃ লতিফ মুন্সি, হরিনার চুন্নু মিয়াসহ একাধিক রোগী বলেন, আমরা বহুবছর ধরেই এ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসি। আগে দেখতাম হাসপাতালে ভর্তি হলে একজন নার্সকে রোগীর সমস্যার কথা জানালে নার্সরা অন্য রোগীর কাছ থেকে আসতে অনেক সময় পার হয়ে যেতো। গত কয়েক মাস ধরে দেখা গেছে এখন আর সেই সমস্যা হয়না। এখন রোগীর কোন সমস্যার কথা বললে সাথে সাথে নার্সরা দৌড়ে আসেন।

তারা আরো বলেন, দেখা যায় একজন চিকিৎসককে সময় মতো না পেলেও নার্সরা কিন্তু সবসময়ই রোগীর পাশে থাকেন। আগের তুলনায় নার্সরা এখন অনেক ভালো সেবা দেন।

এদিকে হাসপাতালের পুরনো সিনিয়র স্টাফ নার্স সালামত উল্ল্যাহ, আঃ রশিদ, আবুল কালাম আজাদ, সরোয়ার হোসেন, সাদেক আলী, আঃ কাশেম পাটওয়ারী, আবু ইউসুফ, নাসরিন আক্তার, শেফালী রানী, আয়শা আক্তার, দেলোয়ার হোসেন, রেপতী রানী ঘোষ, ফেরদৌসী আক্তারসহ বেশ ক’জন নার্স রোগীদের মাঝে আরো বেশি চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধি করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, নার্সদের কাজই হচ্ছে মানুষের সেবা করা। আমরা সবসময়ই চেষ্টা করি রোগীদেরকে ভালো সেবা দেয়ার জন্য। এ হাসপাতালের সুনাম ধরে রাখতে আমরা সবসময়ই রোগীদেরকে সঠিক সেবা দিয়ে যেতে চাই। নার্সদের অবহেলায় কোন রোগীর সমস্যা হোক তা আমরা কখনই প্রত্যাশা করিনা। তারা আরো বলেন, আমরা সবসময়ই চেষ্টা করি সঠিক সময়ে হাসপাতালে ডিউটিতে আসতে। আমরা আমাদের সেবার মাধ্যমে রোগীদেরকে সুস্থ্য ও সবল করার চেষ্টা করবো।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের নার্সিং সুপার ভাইজার কল্পনা দাস চাঁদপুর টাইমসকে জানান, বর্তমানে হাসপাতালে ১ শ ৩ জন নার্স দায়িত্বে নিয়োজিত আছে। এরমধ্যে সিনিয়র স্টাফ নার্স ৮৮ জন, স্টাফ নার্স ৭ জন, সহকারী নার্স ৪ জন, উপসেবা তত্বাবধায়ক ২ জন ও সুপার ভাইজার ২ জন। এছাড়াও বিভিন্ন পদে আরো ৩৭ টি পদ খালি রয়েছে। আর সে শূন্য পদগুলো হলো উপসেবা তত্বাবধায়ক ১ জন, নাসিং সুপারভাইজার ১ জন, সিনিয়র স্টাফ নার্স ২৯ জন, স্টাফ নার্স ১ জন। শূন্য এই ৩৭ টি পদে যদি লোক নিয়োগ থাকতো তাহলে দেখা গেছে হাসপাতালের রোগীরা আরো বেশি সেবা পেতেন।

প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি
: আপডেট, বাংলাদেশ ১১ : ০০ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০১৭, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

Leave a Reply