তরুণ ব্লগার ও গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় ওরফে নিলয় হত্যার পর আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ (একিউআইএস) শাখার কর্মীরা বাংলাদেশে কার্যক্রম চালাচ্ছে কি না এই বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশে একিউআইএসের অস্তিত্ব আছে কি না তা নিয়েও চলছে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ।
নিলয় হত্যার পর আনসার আল ইসলামের (আল কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ-একিউআইএস, বাংলাদেশ শাখা) দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়ার পর গোয়েন্দারা জোরেসোরেই মাঠে নেমেছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে। এবার তারা ধরেই নিয়েছে বাংলাদেশে সংগঠনটির অস্তিত্ব রয়েছে।
এর আগে ফেব্রয়ারির শেষের দিকে মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা, মার্চের শেষের দিকে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যা ও মে এর প্রথম দিকে ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যার পরও দায় স্বীকার করে অনলাইনে বিবৃতি দিয়েছিল আল কায়েদা।
সেই সময়ে গোয়েন্দারা দাবি করেছিল, বাংলাদেশে আল কায়েদার কোনো অস্তিত্ব নেই। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মুখপাত্র ও যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলামও জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে আল কায়েদার কোনো অস্তিত্ব নেই।
তবে নিলয় হত্যার পর দায় স্বীকার করে আল কায়েদার বিবৃতির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গেই বিবেচনা করছে গোয়েন্দারা। এরই মধ্যে তারা মাঠে নেমে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপ-কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘এর আগে ব্লগার হত্যার পর দায় স্বীকার করে দেয়া বিবৃতির বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এবার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গোয়েন্দারা মাঠে জোরেসোরেই কাজ করছে।’
পুলিশ কর্মকর্তা মুনতাসিরুলের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে এই বিষয়টি স্পষ্ট যে, এবার আর তারা অস্বীকার করছে না বাংলাদেশে আল কায়েদার তৎপরতা নেই। বরং বিষয়টি তারা এবার খতিয়ে দেখতে চান।
তবে র্যাবের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বেশ জোর দিয়েই বলেছেন, বাংলাদেশে একিআইএসের অস্তিত্ব আছে। তবে বিবৃতি কারা দিয়েছে এই বিষয়ে তারা এখনো নিশ্চিত নন।
র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ বাংলামেইলকে বলেন, ‘একিউআইসের অস্তিত্ব আছে, এই বিষয়টি নিশ্চিত করেই বলা যায়। র্যাব গত ০১ জুন রাজধানী থেকেই সংগঠনটির বাংলাদেশ শাখার প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা মাইনুল ইসলাম ও উপদেষ্টা মুফতি জাফর আমিনসহ ১২ সক্রিয় কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।’ তবে বিবৃতি সংগঠনটিই দিয়েছে কি না এই বিষয়ে তারা নিশ্চিত নন।
ব্লগারদের হত্যার পর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়ার কারণ হিসেবে র্যাবের গোয়েন্দা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘হত্যা যারাই করুক না কেন দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিলে জঙ্গি সংগঠনের কর্মীরা উৎসাহিত হয়। আর এ কারণেই তারা এই কাজ করে থাকে।’
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur