Home / চাঁদপুর / ‘মাইয়্যাটারে তোরা ফিরাই দে, আল্লায় কি তাগো বিচার করবো না’
মাইয়্যাটারে তোরা ফিরাই দে, আল্লায় কি তাগো বিচার করবো না
ফারজানা আক্তার মুক্তা ও কাউসার বেপারী সুজনের বিয়ের ছবি। পাশে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি মাটি থেকে ওপরে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দেওয়া নববধু মুক্তা ইনসেটে ফারজানা আক্তার মুক্তা।

‘মাইয়্যাটারে তোরা ফিরাই দে, আল্লায় কি তাগো বিচার করবো না’

‘বিয়ের সুখ সইলনারে মা, ওরা বাঁচতে দিলো না তোরে, ওরা আমার মাইয়্যাটারে মাইরা ফেলছে, আমার মাইয়্যাটারে তোরা ফিরাই দে, আল্লায় কি তাগো বিচার করবো না।’

একমাত্র মেয়ে হারানো মা সীমা বেগমের কান্না কন্ঠে চিৎকার করে প্রতিনিয়ত পরিবারের স্বজন ও আশপাশের মানুষকে কাঁদাচ্ছে। যাকে দেখছেন তাকেই এস বলে বেড়াচ্ছেন।

মুক্তার পিতা চাঁদপুর পৌরসভার ১৪ নং ওয়ার্ড শিলন্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. মনির হোসেন ভূঁইয়া চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, ‘মুক্তাকে যৌতুকের টাকার জন্য প্রায়ই মারধর করা হত। এই বছর জানুয়ারী মাসে মুক্তার বিয়ে হয়েছে। তাদের চাওয়া পাওয়া তো পূরণ করলাম। একটু টাকা দিতে দেরি হওয়ায় আমার মাইয়্যাটারে তারা মাইরা ফালাইছে।’

কান্না কন্ঠে তিনি আরো বলেন, ‘আমার মাইয়্যা গলায় ফাঁস দেয় নাই। স্বামী সুজন, শাশুড়ী শাহানারা ও ননদ শান্তা দুপুরে খাবার পরে মুক্তারে বালিশ চাপা (শ্বাসরুদ্ধ) দিয়া মাইরা ফেলাইছে। তারে মাইরা ওরনা দিয়া ঘরের আড়ার সঙ্গে জুলাইয়া রাখছে। মাটি থেকে মাত্র ২ থেকে ৩ ইঞ্চি উপরে মানুষ কেমনে ফাঁসি দেয়। আমি এর বিচার চাই।’

এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা (এস আই) ত্রিনাথ সাহা বলেন, ‘ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছুই বলা যাবে না।’

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের জানুয়ারী মাসের ৩ তারিখ চাঁদপুর পৌরসভার ১৪ নং ওয়ার্ড শিলন্দিয়া গ্রামের মো. মনির হোসেন ভূঁইয়ার একমাত্র মেয়ে ফারজানা আক্তার (মুক্তা) এর সাথে রেলওয়ে জেডিসি কলোনীর আলমগীর বেপারীর ছেলে কাউছার বেপারী (সুজন) এর সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সুজনকে ৫০ হাজার টাকা নগদ ও ৬ আনি স্বর্ণ প্রদান করা হয়। বিয়ের আগে সুজন ঢাকায় নকশার কাজ করত। বিয়ের পরে সুজন ঢাকায় কাজ ছেড়ে দিয়ে চাঁদপুর চলে আসে। পরে সুজনের মা শাহনারা বেগম (২৬-৭-২০১৬ ইং তারিখে) নববধু মুক্তাকে এলাকায় দোকান দিবে বলে বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে দিতে বলে। মুক্তা টাকার কথা পরিবার কে বলতে পারবে না বললে ‘স্বামী সুজন, শ্বাশুড়ী ও ননদ শান্তা তাকে মারধর করে।’

পরে মুক্তা বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানায়।

মঙ্গলবার (৯ আগষ্ট) মুক্তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে বাদ আসর শহরের বাবুরহাট এলাকার শিশু সদনে জানাজার নামায শেষে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এ সংক্রান্ত আগের প্রতিবেদনটি ক্লিক/টাচ্ করে দেখুন….চাঁদপুরে ফাঁস দেয়া অবস্থায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

মাইয়্যাটারে তোরা ফিরাই দে, আল্লায় কি তাগো বিচার করবো না

About The Author

প্রতিবেদক- মাজহারুল ইসলাম অনিক

: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০:৫০ পিএম, ১০ আগস্ট ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ

Leave a Reply