আর কখনও কলেজে যাবে না দিতি

পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটিয়ে ফেরা হলো না বরিশাল নার্সিং কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সায়মা সাদিকার। দুর্ঘটনা তাকে ছুটি দিয়েছে জীবন থেকে।

শুক্রবার বিকালে মাদারীপুরে ব্রিজের রেলিং ভেঙে বাস খাদে পড়ে গিয়ে আরও আট যাত্রীর সঙ্গে নিহত হন তিনি।

নড়াইলের গোবরা গ্রামের মেয়ে সাদিকা বিএসসি ইন নার্সিং করতে চলতি বছরেই ভর্তি হয়েছিলেন নাসিং কলেজে। গত ১৮ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত ছিল কলেজের গ্রীষ্মকালীন ছুটি।

সাদিকার বাস দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গোপালগঞ্জ থেকে মাদারীপুর ছুটে আসেন তার সহপাঠী রাজীব মণ্ডল।

তিনি জানান, শনিবার থেকে তাদের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা ছিল।

ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে থাকা রাজিব দুর্ঘটনার খবর পান সাদিকার সঙ্গে থাকা দিতি নামের একই নার্সিং কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর কাছ থেকে। দিতির বাড়িও নড়াইলে হওয়ায় একসঙ্গেই রওনা হয়েছিলেন তারা। দুর্ঘটনায় দিতি আহত হয়েছেন।

আহত দিতির বরাত দিয়ে রাজীব বলেন, সাদিকা ও দিতি ফরিদপুরের ভাঙা উপজেলার বাসস্ট্যান্ড থেকে বরিশালগামী সুগন্ধা পরিবহনের একটি বাসে ওঠে রওনা দেয়।

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসটিতে একসঙ্গে জায়গা না পাওয়া দিতি সামনের দিকে আর সাদিকা বাসের পেছনের দিকে সিটে বসেছিলেন।

রাজীব আরও বলেন, বাসটি মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের সমাদ্দার ব্রিজের উপরে উঠলে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। আহত অবস্থায় জ্ঞান ফিরে পেয়ে সাদিকাকে দেখতে না পেয়ে দুর্ঘটনার বিষয়টি দিতি তাকে ফোনে জানান।

ঘটনাস্থলেই মারা যাওয়া সাদিকার লাশ পাওয়া যায় সবশেষে।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মাদারীপুর এসেছেন নিহত সাদিকার বাবা মনজুরুল ইসলাম। মেয়ে হারানোর শোকে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন তিনি। মেয়ের লাশ বুঝে নিয়ে রাতেই নড়াইলের উদ্দেশ্যে রওনা হন মনজুরুল।

ছাত্রী হিসেবে সায়মা সাদিকা অত্যন্ত শান্ত ও খুব মেধাবী ছিল বলে জানান বরিশাল নার্সিং কলেজের এডাল্ট নার্সিং বিভাগের শিক্ষক আলী আজগর। তিনি বলেন, “তার এমন অকাল মৃত্যুতে আমরা বাকরূদ্ধ।”

মাদারীপুর মডেল থানার ওসি জিয়াউল মোর্শেদ বলেন, সুগন্ধা পরিবহনের বাসটির চাকা পাংচার হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল, তাতেই ব্রিজের রেলিং ভেঙে খাদে পড়ে যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

নিউজ ডেস্ক :  আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২:০০ পিএম,  ২৭ মে  ২০১৬, শনিবার

ডিএইচ

Share