বিভিন্ন উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে যেসব কার্ড পাঠানো হয় সেগুলো অটিস্টিক শিশুদের হাতে আঁকা ছবি থেকে তৈরি করা কার্ড বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলছেন, ‘বিভিন্ন উৎসবে মানুষের কাছে আমি যেসব কার্ড পাঠাই, অটিস্টিক শিশুদের আঁকা কার্ড পাঠাই। যার কার্ড নেই তাকে এক লাখ করে টাকাও প্রদান করি, সম্মানি হিসেবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্ড সাধারণত ২০ থেকে ২৫ হাজার কপি ছাপানো হয়। এভাবেই আমি কয়েক বছর থেকে অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশুদের হাতে আঁকা ছবি দিয়েই শুভেচ্ছা কার্ড বানিয়ে তা পাঠিয়ে আসছি।’
সোমবার (২ এপ্রিল) বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় তিনি বলেন, ‘অটিজম বিষয়ে একসময় আমারও ভালো ধারণা ছিল না। আমার মেয়ে পুতুল এসব বিষয় নিয়ে আমেরিকায় লেখাপড়া করেছে, পুতুল অটিজম নিয়ে কাজ করে। একবার আমার মেয়ে পুতুলের সঙ্গে গিয়ে দেখলাম- একটা বাচ্চা হাঁটতে পারে না, চলতে পারে না, ট্রলির মধ্যে শুয়ে আছে। সে মুখ দিয়ে তুলি কামড়ে ধরে ছবি আঁকছে। আমি সে ছবিটা নিলাম।’ এ ঘটনার পর থেকেই অটিস্টিক শিশুদের ছবি দিয়ে শুভেচ্ছা কার্ড বানিয়ে আসছেন বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
অটিজম বিষয়ে সরকারের ভূমিকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অটিজমের ওপর একটা রেজ্যুলশনও গ্রহণ করেছে জাতিসংঘ। শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী একটা সচেতনতা শুরু হয়েছে। আমাদের দেশেও অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন লোকদের জন্য প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একটা কমপ্লেক্স তৈরি করতে চাই। মৃত্যু পর্যন্ত অটিস্টিক হয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে এখানে। সূচনা ফাউন্ডেশন নামে একটি ফাউন্ডেশনও করে দিয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো,প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।’
অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধীদের অবজ্ঞা না করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সুযোগ পেলে তারাও দেশের জন্য ভূমিকা রাখতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সুস্থ খেলোয়াররা আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে স্বর্ণ নিয়ে আসতে পারে না কিন্তু প্রতিবন্ধী খেলোয়াররা বিদেশ থেকে দেশের জন্য স্বর্ণ জিতে নিয়ে আসে। আমরা সাভারে ২৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিবন্ধী ক্রীড়া কমপ্লেক্স গড়ে তুলছি। জাতীয় সংসদ প্রাঙ্গণেও তাদের খেলার জন্য জায়গার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এক লাখ ২৫ হাজার প্রতিবন্ধীকে ভাতা দিচ্ছি। প্রতিবন্ধী শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা হয়েছে।’ এসময় অটিস্টিক শিশুদের প্রতিভার বিকাশে দেশের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
(জাগো নিউজ)