সৃষ্টিকর্তার কাছে মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার দিচ্ছিলেন শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের আহমেদ চোকদারকান্দি গ্রামের লাভলী বেগম।
বারবার বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, ‘আমার পরীর মতো দেখতে মেয়েটার সাথে পাশবিক আচরণ করা হয়েছে। পাষণ্ডরা অত্যাচার করে তাকে মেরে ফেলল। আল্লাহ পাষণ্ডদের বিচার করো।’
তিনদিন নিখোঁজ থাকার পর গতকাল বুধবার রাতে উদ্ধার করা হয় লাভলীর ১৩ বছর বয়সী মেয়ে রিমা আক্তারের ক্ষতবিক্ষত লাশ। উদ্ধার হওয়া লাশটির পরনে ছিল না কোনো কাপড়, বুকে ছিল ধারালো অস্ত্রের কোপ, পেট ছিল কাটা।
এই ক্ষতবিক্ষত লাশের সঙ্গে ফুটফুটে মেয়েটির চেহারা কিছুতেই মেলাতে পারছিলেন না লাভলী। তাই কাঁদতে কাঁদতেই বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার চোকদারকান্দি গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় ইলিয়াছ চোকদারের মেয়ে ও স্থানীয় নাওডোবা হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী রিমা আক্তারের লাশ। এর আগে ময়নাতদন্ত শেষে যখন বাড়িতে রিমার লাশটি আনা হয়, তখন সেখানে সৃষ্টি হয় এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, রিমাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
কাঁদতে কাঁদতে রিমার বাবা ইলিয়াছ চোকদার বলছিলেন, এত খোঁজাখুঁজির পর পাটখড়ি দিয়ে ঢাকা অবস্থায় পেলাম মেয়ের লাশ। তিনি বলেন, ‘ওরা আমার মেয়েটাকে ধর্ষণ করার পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে হত্যা করেছে। যারা আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।’
রিমা দেখতে অনেক সুন্দরী ছিল বলে জানান তার ফুফু সাবিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘বয়সের তুলনায় ওর শারীরিক গঠন ভালো ছিল। এ কারণেই দুর্বৃত্তদের কুনজরে পড়ে সে।’
রিমার পরিবারের সদস্যরা জানান, গত সোমবার বিকেলে চোকদারকান্দি গ্রামের জব্বার হাওলাদারের ছেলের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় রিমা। রাতেও বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে তাকে খুঁজতে শুরু করেন। একপর্যায়ে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় পাশের হাওলাদারকান্দি গ্রামের একটি পরিত্যক্ত ভিটায় স্থানীয় লোকজন পাটখড়ি দিয়ে ঢাকা একটি লাশ দেখতে পেয়ে জাজিরা থানার পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ সময় রিমার স্বজনরা তার লাশ শনাক্ত করেন। পরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে আজ পরিবারের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হয়।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক জানান, মেয়েটির পরনে কোনো পোশাকই ছিল না। পেট কাটা ও নাড়িভুঁড়ি বের করা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে হত্যার আসল কারণ জানা যাবে বলেও জানান ওসি।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আল আমিন (২৪) নামে এক যুবককে জিঙ্গাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি এনামুল হক। (এনটিভি)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ৮: ৪০ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বৃহস্পতিবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur