শীর্ষ সংবাদ

আমাদেরকে আইন করে আটকানো যাবে না : খালেদা জিয়া (ভিডিওসহ)

‘‘বহু মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। গুম-খুন করে কোনো সরকার পার পেতে পারে না। তার পরিণতি হয়েছে করুণ। আমাদের বহু নেতাকর্মী এখনও মিথ্যা মামলায় জেলখানায় রয়েছে। অন্যায়ভাবে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মানুষ খুন করে জবরদস্তি করে ক্ষমতায় থেকে থেকে যা অর্জন করেছেন তা ভালো বয়ে আনবে না। নতুন নতুন আইন করে করে বিরোধী দলকে আটকানো যায় তা চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদেরকে আইন করে আটকানো যাবে না। গণতন্ত্র আইন করে আটকানো যায় না। ব্যক্তি বিশেষের স্বার্থ হাসিল করে কল্যাণ করা যায় না। এ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে কীভাবে? ২০০৮ সালে যে নির্বাচন হলো, তা কেনো হয়েছিল। তা হয়েছিল পাতানো নির্বাচন। পাতানো নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল। তা জনগণের কোনো কল্যাণ বয়ে আনেনি।’’

৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে বিএনপির সমাবেশে আজ এসব কথা বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

তিনি আরো বলেন, “এ সরকারের আমলে শেয়ার বাজার ধ্বংস হয়েছে। ব্যাংক ধ্বংস হয়েছে। শিল্প কলকারখানা ধ্বংস হয়েছে। তারা শিক্ষকদেরকে অবহেলা অসম্মান করেছে। শিক্ষকদেরকে অবহেলা অসম্মান করার সুযোগ নেই। এভাবে দেশে শান্তি আসবে না। দেশের পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হবে।”

বেগম খালেদা জিয়া এ সময় বলেন, “দেশ স্বাধীনের জন্য আমরা যুদ্ধ করেছি। এ সরকারের কার্যকলাপের জন্য দিন দিন দেশের মানুষের শান্তি নষ্ট হচ্ছে। আমরা চাই বিদেশী বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসুক, কিন্তু সেই সুযোগ নেই। কারণ কমিশন না দিলে বাংলাদেশে ব্যবসা করা যায় না। এটা কি ভালো কাজ হচ্ছে?”

তিনি বলেন, “পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জ্বালানী তেলের দাম কমানো হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে কমছে না কেনো?

তিনি ছাত্রদলের উদ্দেশ্যে বলেন, “শুধু রাস্তাঘাটে শ্লোগান দিলেই হবে না। বুকে দেশপ্রেম থাকতে হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা কেউ কথা বলতে পারি না। তারা নির্বাচন করে জিততে পারে না বলে প্রেসক্লাবও দখল করে নিয়েছে। বহু সাংবাদিক নেতাকে গ্রেফতার করেছে। বহু সাংবাদিক বেকার হয়েছে। বহু সাংবাদিককে খুন করা হয়েছে। কোনো খুনের বিচার হয়নি।”

তিনি সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করে বলেন, “আমি নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করছি।”

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলোয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। খালেদা জিয়া দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে মঞ্চে উপস্থিত হন।

ঢাকা মহানগর বিএনপির আয়োজনে এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির উপদেষ্টা ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। মঞ্চের ব্যানারে লেখা হয়েছে, ‘৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে জনসভা’।

মঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মাহবুবুর রহমান, আ স ম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, আবদুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করছে। এ উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। তবে শর্তসাপেক্ষে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি দেয় ডিএমপি।

সমাবেশ ঘিরে ইতোমধ্যে নয়াপল্টন এবং এর আশপাশের এলাকায় নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নাইটেঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত পুরো রাস্তাজুড়ে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে।

সমাবেশ উপলক্ষে বক্তব্য রাখেন- ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আকরামুল হাসান, শ্রমীক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আবুল বাশার প্রমুখ। পর্যায়ক্রমে দলের সিনিয়র নেতারা বক্তব্য রাখছেন।

খালেদা জিয়ার ভাষণের পূর্ণাঙ্গ ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন  

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট || আপডেট: ০৪:২৫ পিএম, ০৫ জানুয়ারি ২০১৬, মঙ্গলবার

এমআরআর  

Share