জাতীয়

আমরা তো বুড়ো হয়ে গেছি, তোমাদের হাতেই দেশকে রেখে যাব : প্রধানমন্ত্রী

স্কাউটদের দেশ পরিচালনার উপযোগী হয়ে গড়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তোমরাই তো একদিন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা তো বুড়ো হয়ে গেছি, আমি তো এখন বুড়ো দাদু। দেশের ভবিষ্যৎ হচ্ছো তোমরা। তোমাদের হাতেই তো দেশকে রেখে যাব।’ খবর : বাসস

তিনি শনিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৮ম জাতীয় কাব ক্যাম্পুরীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে স্কাউট আন্দোলন আরও সম্প্রসারণ ও জোরদার করতে সব বিভাগে স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণে প্রয়োজনী পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালনায় প্রত্যেক বিভাগে ক্যাম্প বা কেন্দ্র তৈরির জন্য নির্দিষ্ট স্থান থাকা প্রয়োজন।

গাজীপুরের মৌচাকে ক্যাম্পুরী অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জ্বল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এবং নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ স্কাউটের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ মৌচাক ক্যাম্পুরী মাঠ থেকে বক্তৃতা করেন। চীফ ন্যাশনাল স্কাউট কমিশনার ও ক্যাম্পুরী চীফ ড. মোজাম্মেল হক খান গণভবনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও স্বাগত বক্তৃতা দেন। কিছু চাইল্ড স্কাউট মৌচাক ক্যাম্পুরী মাঠ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

গাজীপুরের মৌচাকে জাতীয় স্কাউটিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শুক্রবার ৬ দিনব্যাপী ন্যাশনাল কাব ক্যাম্পুরী শুরু হয়েছে। এতে দেশের সব উপজেলা থেকে ৮ হাজার কাব ও কর্মকর্তা যোগ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১০ অঞ্চল থেকে নির্বাচিত ৭১ কাব স্কাউটকে শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন।

শেখ হাসিনা স্কাউট আন্দোলনকে জোরদার করতে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে মানুষের জন্য ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ গড়ে উঠলে দেশ এগিয়ে যাবে। এতে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠবে এবং যা তাদের চরিত্র গঠনেও বিরাট অবদান রাখবে। এ জন্য প্রতিটি স্কুলেই কাব স্কাউট আন্দোলন শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

তিনি কাব স্কাউটদের দেশ পরিচালনার উপযোগী হয়ে গড়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তোমরা নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জন করবে, দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসবে, দেশ-জাতির জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবে এবং তবেই দেশ উন্নত ও সমৃদ্ধশালী হবে।’

তিনি স্কাউটদের বিজয়ী জাতির সন্তান হিসেবে সবসময় মাথা উঁচু করে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা বিজয়ী জাতি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। এই চেতনা ধারণ করে আমরা মাথা উঁচু করে সামনে এগিয়ে যাবো।’

স্কাউটদের জন্য নির্মিতব্য ’শতাব্দী ভবন’ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য এখন পর্যন্ত তার দফতরে না আসায় প্রধানমন্ত্রী কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রকল্পটা আসলেই তা অনুমোদন করা হবে। এটা একটু তাড়াতাড়ি হোক, তা সবাই আশা করে।’

তিনি এ ধরনের প্রকল্পের ফাইলের গতি আরও বাড়াতে সংশ্লিষ্ট মহলকে নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ‘এসব ফাইল দ্রুত আসলে তা দ্রুতই অনুমোদন পাবে। কোনোটি পড়ে থাকবে না।’

গণভবনে ‘শাপলা অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণে আসা কাব স্কাউটদের আগমনে উচ্ছাসিত প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ গণভবন ক্ষুদে স্কাউটদের পদচারণায় মুখরিত। এরপর সবাই পর্যায়ক্রমে আসবে। সবাইকে আমি আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তোমাদের আগমনে আজ গণভবন ধন্য।’

তিনি ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণকারী কাব স্কাউটদেরও গণভবনে আমন্ত্রণ জানান।

শেখ হাসিনা মৌচাকে ক্যাম্পুরী প্রাঙ্গণে উপস্থিত থাকতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তিনি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপনকে দেশের ডিজিটালাইজেশনের একটি দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন গণভবনে স্কাউট আন্দোলনের শতবর্ষ উপলক্ষে ডাকটিকেট অবমুক্ত করেন। এ সময় তিনি মৌচাকের ক্যাম্পুরীতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে অনেকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সরাসরি শুভেচ্ছা ও কুশলবিনিময় করেন। ক্ষুদে স্কাউটদের আয়োজনে একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ডিসপ্লেও উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ১০:১০ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০১৬, শনিবার

এমআরআর  

Share