‘স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে আমরণ অনশন/ স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেলে মরে যাবো/ রুহিনের ঘরে যাবো নইলে বিষ খাবো। ’ সাদা কাগজে দাবি সংযুক্ত এমন সব লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে অনশন করছিলেন এক যুবতী।
২০ নভেম্বর শনিবার বিকেলে সিলেট নগরের কালিবাড়ি বন্ধন-১৪/ডি বাসার সামনে অনশন করতে দেখা যায় তাকে। বাসার বাসিন্দা মো. আবু হানিফের ছেলে মিছবাহুজ্জামান রুহিনকে স্বামী দাবি করেছিলেন তিনি।
স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে ওই নারী এসেছেন নারায়ণগঞ্জ থেকে। শুক্রবার সিলেটে পৌঁছে শনিবার প্রেমিকের বাসার সামনে দাঁড়িয়ে তিনি অনশন করেন।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার শিদনা গ্রামের মো.নুরুল ইসলামের মেয়ে রেহেনা। তার দাবি ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়ে ৮ মাস আগে রুহিন তাকে এফিডেভিড করে বিয়ে করেন। বিয়ে হয়েছে নারায়নগঞ্জে। বিয়েতে সালমান নামের একজন সাক্ষী ছিলেন। বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যদেরও জানা।

অনশনে থাকা নারী বলেন, ফেসবুকে তাদের মাধ্যমে পরিচয় হয়। এরপর দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে তারা দুজন বিয়ে করেন। বিয়ের পর ৮ মাস একসঙ্গে থেকে সংসার করেছেন। কিন্তু স্ত্রী হিসেবে তাকে তুলে আনছেন না রুহিন। যে কারণে আদালতে যান তিনি। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে করা মামলাটি এখন পিবিআই তদন্ত করছে।
ভুক্তভোগী আরও বলেন, রুহিনের মা মামলা না করতে কান্নাকাটি করে বারণ করেছিলেন। কিন্তু ঘরে তুলে নিচ্ছেন না। কোনো উপায় না দেখে মামলায় যেতে হলো। তবে রুহিন ঘরে তুলে নিলে মামলা তুলে নেবেন তিনি।
ওই নারী বলেন, কাবিননামার মূল কপি রুহিনের কাছে আছে। আমার কাছে কাবিনামার অস্পষ্ট কপি রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে মোবাইল ফোনে রুহিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সিলেট সিটি করপোরেশনের স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইলিয়াছুর রহমান জানান, ‘ওই মহিলা আমাদের কাছে এসেছিলেন বিচার চাইতে। আমরা বলেছি-কাবিননামা বা উপযুক্ত প্রমাণ নিয়ে আসতে। এরপর তিনি চলে যান। আর আসেননি। ’
মামলার ব্যাপারে জালালাবাদ থানার সহকারী উপ-পুলিশ কমিশনার শফিকুর রহমান জানান, আদালতে মামলা দায়েরের পর পিবিআই থেকে রুহিনের বাড়ি-ঘরের ঠিকানা ও তার স্বভাব-চরিত্রের বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরে আমি তদন্ত করে এ বিষয়ে পিবিআই’র কাছে রিপোর্ট প্রদান করেছি। ’
এ বিষয়ে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হুদা খান বলেন, এক সপ্তাহ আগে ওই নারী রুহিনের বাসায় এসেছিলেন। সেদিন নাকি তার মা-বোনেরা তাকে হুমকি দিয়ে বের করে দিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে গেছেন। আজ আবার তিনি এসেছেন এবং রুহিনকে স্বামী হিসেবে দাবি করছেন।
ওসি আরও বলেন, যেহেতু মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে, সত্য-মিথ্যা তারা দেখবে। আইনগতভাবে যতটুকু সহায়তা করার, সত্যতা পেলে আমরা করে যাবো।
স্টাফ করেসপন্ডেট, ২০ নভেম্বর ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur