চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নের প্রতিটি মাঠজুড়ে অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা আমন ধানের ডগায় দুলছে শীতের শিশির বিন্দু। দিগন্তজুড়ে যেদিকে তাকাই শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজের সমারোহে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। ঋতু শরৎকে বিদায় দিয়ে হেমন্তকে বরণ করেছে প্রকৃতি। উপজেলার প্রতিটি মাঠে ধানের শীষে পড়ছে শীতের শিশির বিন্দু। সকাল হলেই দেখা মিলছে সাদা কুয়াশার ভেলা। এই কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা।
শস্য-শ্যামলা, সবুজ বাংলার কৃষি প্রধান দেশের চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার দিগন্ত জুড়ে খোলা মাঠে দুলছে এখন কৃষকের কাঙ্খিত স্বপ্ন। ধু ধু চোখে নজর কাড়ছে আমন ধানের খেত। ভালো ফলনের আশায় আমন ধান পরিচর্যায় কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠে মাঠে চলছে আমন ধান পরিচর্যার মহোৎসব। কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে ধান পরিচর্যার কার্যক্রম। ধান খেতগুলো এখন কৃষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে। কার্তিক মাসের শুরুতেই শিশির ভেজা বাতাসে দুলছে ধানের গাছ। চারিদিকে এখন সবুজের সমারোহ। গত বছরের চেয়ে এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এদিকে উপজেলার ডিলারদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ তেল ও সার পাওয়ায় কৃষকরা অনেকটা আশ্বস্ত হয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৩শ’৩৩ হেক্টর জমিতে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে।
উপজেলার আদুরভিটি গ্রামের কৃষক নবীর হোসেন জানান, এবারে চারা রোপণের সময় পানি সংকট থাকলেও পরবর্তীতে বৃষ্টির পানিতে ধানের গাছ এখন ভালো রয়েছে। বন্যা কিংবা কোনো প্রাকৃৃতিক দুর্যোগ না হলে আশানুরূপ ফলন ঘরে তোলা সম্ভব।
উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা পাভেল খান পাপ্পু জানান, কৃষকদের খেতে কঞ্চি পুঁতে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যাতে ওই সমস্ত কঞ্চিতে পাখি বসে জমির ক্ষতিকর পোকা নিধন করতে পারে। সেই সাথে পরিচর্যা করে কম মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ করে অধিক ফলনের কলা-কৌশলও কৃষকদের শেখানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সালাউদ্দিন জানান, চলতি আমন মৌসুমে কৃষকদের কাঙ্খিত ফসল অর্জনে প্রতিটি ব্লক পর্যায়ে গিয়ে ক্যাম্পেইনসহ নানা ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও মাজরাপোকা এবং অন্যান্য আবাদ বিনষ্টকারী পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা পাচিংসহ আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন। ফলে উপজেলার কোথাও মাজরা পোকা, কারেন্ট পোকার আক্রমণ নেই বললেই চলে। এছাড়া এবারও আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক