ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে বৃটিশ শাসনামলের খননকৃত এসবি খাল। এক সময় এসবি খালটি কোড়ালিয়া রোডের ব্রিজের নিচ থেকে সরু খাল দিয়ে মেঘনা নদীর সাথে সংযোগ থাকলেও তা ধীরে ধীরে জমির মালিকদের দখলের কারণে সে খালটি হারিয়ে যাচ্ছে।
যার ফলে এসবি খাল এখন শুধু ডাকাতিয়া নদীর সাথেই সংযোগ রয়েছে। অতি সম্প্রতি এসবি খাল সংলগ্ন চাঁদপুর শহরের বৃহত্তম রেলওয়ে হকার্স মার্কেট ও তার সামনে থাকা বিভিন্ন মার্কেটের সব ময়লা-আবর্জনা এসবি খালের উপর ফেলার কারণে দিন দিন এটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ভরাটের কারণে পানি নিষ্কাশনের ঠিকমতো হচ্ছে না। এমন অবস্থা রেলওয়ের ব্রিজ সংলগ্ন স্থানেও।
বর্তমানে খালতি হকার্স মার্কেটের সকল আবর্জনা এবং ফুলের দোকানের ককশীট ফেলে এটি এখন ভরাট হওয়ার পথে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কে পাকা ব্রিজের দু’পাশে তাকালে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
ভরাট হওয়ার ফলে পাকা ব্রিজের উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে পানি উচ্চতায় তফাৎ দেখা যায়। ব্রিজের দক্ষিণ পাশে সামান্য জায়গা দিয়ে কোনোমতে পানি নিষ্কাশন পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এমনটি চলতে থাকলে এসবি খালটি হারিয়ে যাবে।
শ্রীরামদী-বিষ্ণুদী নদীর সংযোগ খাল হিসেবে সর্বদা সুপরিচিত। বৃটিশ এবং পাকিস্তান দু’য়ের শাসনামলে এসবি খাল দিয়ে মালামাল এবং যাত্রীবহনকারী নৌকা চলাচল করেছিলো।
স্বাধীনতার পর চাঁদপুর পৌর এলাকার পরিধি বৃদ্ধি এবং বসবাসকারী মানুষজন ক্রমশ বেড়ে যাওয়া এবং পৌর এলাকা ধীরে ধীরে উন্নতি ও যন্ত্রচালিত যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ার কারণে এ খালটি ওই সকল কাজে তেমন ব্যবহার হয়নি।
তবে এসবি খালটি দিয়ে চাঁদপুর শহরের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।
চাঁদপুর পৌর এলাকার প্রধান সড়ক, পাড়া-মহল্লার পানি নিষ্কাশনের সকল ড্রেনেজের পানি এসবি খালে এসে পড়ছে। শুধু তাই নয়, অতি বৃষ্টি, বন্যার সকল পানি নিষ্কাশন বা সরে যাওয়ার একমাত্র ক্ষেত্র হচ্ছে এসবি খাল।
দীর্ঘদিন এসবি খালের উপর এবং পাশে স্থায়ীভাবে অপরিকল্পিত স্থাপনা তুলে এক শ্রেণীর মানুষজন খালটিকে দখল করে রেখেছিলো। চাঁদপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ ২০০৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেয়ার পর ২০০৭ সালের প্রথম দিকে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এসবি খালের দু’ পাশে থাকা দখলকৃত সকল স্থাপনা ভেঙ্গে অপসারণের পাশাপাশি খালটির দু’ পাশকে বাউন্ডারী দেয়ার ব্যবস্থা করেন।
এমনকি চাঁদপুর পৌরসভার প্রচুর অর্থ ব্যয় করে কোড়ালিয়া রোড থেকে শুরু করে যমুনা ওয়েল ডিপোর পশ্চিম ডাকাতিয়া নদীর তীর পর্যন্ত আবর্জনা মুক্ত করে স্বাভাবিকভাবে পানি নিষ্কাশনের পথ সুগম করে দেয়া হয়। বর্ষা মৌসুমেও ২ থেকে ৩টি নৌকা দিয়ে অজ¯্র শ্রমিকের সাহায্যে এসবি খালে থাকা ময়লা-আবর্জনা এবং অজ¯্র কাদা মাটি পানির নিচ থেকে অপসারণ করেন।
চাঁদপুর পৌরসভার অর্থায়নে চাঁদপুর শহরে থাকা বৃহত্তম রেলওয়ে হকার্স মার্কেটকে ঝুঁকিমুক্ত রাখার লক্ষ্যে মার্কেটের পূর্ব পাশে এবং ব্রিজের দক্ষিণে ছোট ছোট ব্লক বিছিয়ে পাড় বাঁধাই করে দেয়া হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও বেশ ক’টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও এমনিভাবে পাড় বেঁধে রক্ষা করা হয়।
শরীফুল ইসলাম [/author]
: আপডেট ৬:০০ এএম, ০৫ মে ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ