বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার পাঁচ নম্বর আসামি রাজবাড়ীর ইফতি মোশাররফ সকালের বাবা ফকির মোশাররফ হোসেনের নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২ ফেব্রুয়ারি রোববার বিকেল ৫টা ১০মিনিটের দিকে পৌর ১নং ওয়ার্ডের ২৮ কলনি পৌর কবরস্থানের সামনে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পড়ে ওই কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এ সময় ফকির মোশাররফ হোসেনের পরিবারের সদস্য, জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানাজায় অংশ নেন। ফকির মোশাররফ হোসেন রাজবাড়ী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ধুনচি গ্রামের আটাশ কলোনি এলাকার বাসিন্দা।
বাবার মৃত্যুর সংবাদ আবরাব হত্যাকারী সকাল জানে কীনা জানতে চাইলে কেউ কিছু জানাননি।
এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী স্বামীর মৃত্যুতে পাগল প্রায় তার স্ত্রী রাবেয়া বেগম। এছাড়া ছেলে ইফতি মোশাররফ সকাল হত্যা মামলায় জেলে।
জানা গেছে, ছেলে ইফতি মোশাররফ সকাল বুয়েট শিক্ষার্থী আবরাব হত্যা মামলার ৫ নম্বর আসামি। সে রাজবাড়ী জেলা শহরের পৌর ১নং ওয়ার্ডের ধুনচী গ্রামের ফকির মোশাররফ হোসেনে বড় ছেলে। সকালের ছোট ভাই ৯ম শ্রেণির ছাত্র। সকালের বাবার টিউশনি টাকায় চলতো তাদের সংসার। হত্যা মামলায় ছেলে সকাল গ্রেফতারের পর থেকে সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকতেন তিনি। ছেলের চিন্তায় স্ট্রোক করে মারা যান তিনি।
ফকির মোশাররফ হোসেনের ভাগনে ইমরান হোসেন কাজল জানান, মামা শুক্রবার ঢাকা থেকে সকালের সঙ্গে দেখা করে এসে গতকাল শনিবার দুপুর অসুস্থতা বোধ করেন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পড়ে রাতে তিনি স্ট্রোক করলে চিকিৎসকরা রাতেই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। কিন্তু ফরিদপুর নেবার পথেই রাত পৌন ৪টার দিকে তিনি মারা যান। আসলে তার ছেলে সকালের চিন্তায় তিনি মারা গেছেন। এখন সকালের মা ও ছোট ভাইয়ের ভবিষৎ অনিশ্চিত। কীভাবে তারা বাঁচবে তা বলা কষ্ট।
সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এমএ খালেক বলেন, ফকির মোশাররফ অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। ছেলের চিন্তায় আজ তিনি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেলেন।
পৌর মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, আসলে সন্তান যত খারাপই হোক না কেন, বাবা তো তার জন্য চিন্তা করবেই। আজ সেই চিন্তা করতে করতে সকালের বাবা ফকির মোশাররফ মারা গেলেন। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন, তিনি যেন বেহেস্তবাসী হন।
ভাই আব্দুল হালিম বকুল বলেন, সকালের বাবার জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেবেন। ভাই চলে গেল, সকালও জেলে এখন সকালের মা ও ছোট ভাইয়ের কি হবে?
বার্তা কক্ষ,২ ফেব্রুয়ারি ২০২০