বর্তমান সময়ে ফেসবুকের কল্যাণে পতিতাবৃত্তির ধরন পাল্টে গেছে। সুশিক্ষিত, আধুনিকতার আড়ালে এই অবৈধ রমরমা ব্যবসা করে অনেকে যেমন অল্প সময়ে ধনাঢ্য ব্যক্তিতে পরিণত হচ্ছে তেমনি করে পতিতারা ফাঁদে ফেলে অনেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
তেমনি একটি ঘটনা পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরছি-
ডালিয়া, আফসানা রহমান, দিপ্তী এরকম বিভিন্ন নামে ফেসবুকে আইডি বানিয়ে আধুনিক পতিতারা টার্গেট করে থাকে ব্যবসায়ী, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা সহ যাদের কাঁচা টাকা উড়ানোর নেশা আছে সেইসব ব্যক্তিদের। ফেসবুকে পরিচয় হয় ডালিয়া (ছদ্মনাম) নামে মেয়ের সাথে এক ব্যবসায়ীয়। ধীরে ধীরে দুজনের বন্ধুত্ব গভীর হয় এবং ইমেইলে ছবি আদান প্রদান, মুঠোফোনে যোগাযোগ চলতে থাকে। একসময় ছেলে জানতে পারে মেয়েটি আসলে একজন পতিতা। ততদিনে দুজনের সর্ম্পক গাঢ় হয়ে যায় এবং লোকটিও জানিয়ে দেয় সে বিবাহিত। ঘরে সুন্দরী স্ত্রী, সন্তান থাকার পরও এধরনের অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যেতে দ্বিধা করেনা সে। ডালিয়া বুঝতে পারে ক্লায়েন্ট তার রূপের মায়াজালে ধরা পড়েছে।
মেয়েদের অকর্ষনীয় ছবি ফেসবুকে ব্যবহার করে সুযোগ বুঝে ডালিয়া তার চাহিদা ক্লায়েন্টকে ইমেইলে পাঠিয়ে দেয় এভাবে: “আই উইল বি এভেইলএবল ফর ইউ ফর ওয়ান নাইট, এনাদার নাইট আই উইল প্রোভাইড ইউ এ গার্ল ফর এনজয়মেন্ট। বাজেট ফাষ্ট নাইট বিডি ১৬,০০০ টাকা। সেকেন্ড নাইট ওয়ান গার্ল ফর ইউ ৮,০০০ টাকা, মাই কাজিন ৫,০০০ টাকা”। (হোটেল চার্জ ক্লায়েন্ট বহন করতে হবে) পতিতা নিজে রান্না করে খাওয়ালে কেমন খরচ হবে সেটিও উল্লেখ করে ইমেইলে! খদ্দেরকে একটি প্যাকেজ পোগ্রামের মধ্যে আনার লোভনীয় অফার! “আমি যদি আমাকে ম্যানেজ করতে পারি তবে সেকেন্ড নাইট তোমাকে সময় দিব, ডোন্ট ওরি জান, আমি তোমার জন্য”! এভাবে পতিতা হয়ে যায় প্রেমিকা!
ডালিয়া টাকা পাঠানোর জন্য ইসলামী ব্যাংকের গুলশান শাখার একটি একাউন্ট নাম্বার পাঠায় এবং নিরাপত্তার খাতিরে অগ্রিম টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে একটি অদৃশ্য চক্র পতিতার সাথে কাজ করে কিন্তু ক্লায়েন্ট বিষয়টি বুঝতে পারেনা! সত্য আসলইে চেপে রাখা যায়না! পতিতা এবং স্ত্রীর সাথে বহুগামিতা চালিয়ে যাওয়ার একপর্যায়ে লোকটির মুঠোফোনে কথোপকথন, মেসেজ, ইমেইল, পতিতার ছবিসহ গোপন অভিসার স্ত্রীর কাছে ধরা পড়ে। এরপর শুরু হয় মনোমালিন্য, ঝগড়া, সংসারে অশান্তি! অনিরাপদ যৌনসর্ম্পকের কারনে একদিকে যেমন এইডস, সিফিলিস সহ বিভিন্নরকম যৌনরোগ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে তেমনিভাবে প্রতারিত হচ্ছে বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ ব্যক্তিরা। অবৈধ শারীরিক সর্ম্পক স্থাপনের মাধ্যমে ভিডিও ক্লিপ, ছবি তুলে, ভয়েস রেকর্ড করে প্রতারণার অসংখ্য ঘটনা বর্তমানে ঘটছে।
যদি কোনভাবে প্রতারক চক্রের হাতে এধরনের অবৈধ সম্পর্কের কোন প্রমাণ থাকে তাহলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুহুর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ার ঝুকি থেকে যায়। অনেক সময় প্রতারণার কৌশল হিসাবে পতিতারা নিজের অসহায়ত্বের কথা বলে সাহায্যের অনুরোধ জানিয়ে সম্পর্ক গড়ার চেষ্ঠা করে। যৌন আকাঙ্খা মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্যতম কিন্তু পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়াটি অবশ্যই অনৈতিক। স্বামীর বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিশোধ নিতে অনেক সময় স্ত্রী পরপুরুষে আসক্ত হয়ে পড়ে।
এভাবে সমাজে বাড়ছে ব্যাভিচার, হত্যাকান্ডের মতো গুরুতর অপরাধ। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে হলে প্রয়োজন স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে বিশ্বাস, পারষ্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং পাশাপাশি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা। ভালবাসার মানুষের সাথে কখনোই প্রতারণা করা যায়না! এখানে দৈহিক সম্পর্কটাই মুখ্য বিষয় নয়। একের প্রতি অন্যের বিশ্বাস, মর্যদা রক্ষা করার নামই ভালবাসা। আবেগের বশবতী হয়ে সাময়িক যৌন বাসনা চরিতার্থ করার লক্ষ্যে অবৈধ সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়ার আগে নিজের বিবেক এবং মূল্যবোধের বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত। ভুক্তভোগিরা মনে করেন এবিষয়ে কঠোর আইন প্রয়োগে সরকারের ভূমিকা রাখা দরকার।(সংগৃহীত)
নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৯:২২ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০১৬, বৃহস্পতিবার
এমআরআর