ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘যারা গুম-খুন ও দেশের টাকা পাচার করলো, তারা কীভাবে দেশ থেকে পালিয়ে গেলো আমরা জানতে চাই, দেশের মানুষ জানতে চায়। আমরা বর্তমান সরকারকে বলেছিলাম, বিগত কয়েক যুগ ধরে এত বেশি জনসমর্থন নিয়ে কোনও সরকার দেশ পরিচালনা করেনি, তার চেয়ে বেশি জনসমর্থন নিয়ে আপনারা দেশ পরিচালনা করছেন। সব শ্রেণিপেশার মানুষ আপনাদের সহযোগিতায় আছে। তাহলে কেন এত ভয় পাচ্ছন? আপনারা কেন খুনি-সন্ত্রাসীদের ধরছেন না। তাদের কেন বিচারের আওতায় আনছেন না?’
রবিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর পুরান বাজারে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির আয়োজনে তিন দিনব্যাপী ওয়াজ মাহফিলে যোগদান করতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
চরমোনাই পীর বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার সরকারের যতগুলো চুক্তি আমরা দেখেছি, তার মধ্যে বাংলাদেশের কোনও স্বার্থ রক্ষা হয়নি। ভারতের সঙ্গে সবশেষ যে ১০টি চুক্তি হয়েছিল, তার সবই ছিল ভারতের স্বার্থ রক্ষার জন্য। যারা খুন-গুম, আয়নাঘর, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, টাকা পাচারসহ দেশে বসে বিদেশের দালালি করেছে তারা জাতীয় নির্বাচনে অযোগ্য। তারা নির্বাচন করতে পারবে না। এখন তারা দেশকে অশান্ত করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু দেশের সব মানুষ একত্রিত থাকলে তাদের নীলনকশা বাস্তবায়ন হবে না।’
চরমোনাই পীর আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে বলেছিলাম, রাজনৈতিক দলগুলোসহ সবার সঙ্গে পরামর্শ করে দেশ পরিচালনা করবেন, আপনাদের সহযোগিতায় আমরা আছি। তবে এই সরকারের সর্বক্ষেত্রে অশান্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কারণ গত সাড়ে ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় ছিল। এমন কোনও জায়গা নেই, তাদের লোক বসায়নি। এখন পর্যন্ত সে জায়গাগুলো পরিষ্কার হয়নি। তারা গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জায়গায় বসে এই সরকারকে নিয়ে বিভিন্ন ঝামেলা তৈরি করার পরিকল্পনা করছে। ফলে অশান্ত পরিবেশ দেখা যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সরকার কেন কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে না? এক্ষেত্রে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কৃষকদের সার-ওষুধ স্বল্পমূল্যে দিতে হবে। সবক্ষেত্রে সরকারকে সজাগ থাকতে হবে। আরও কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
এই দিন মাহফিলে ইসলামের বিভিন্ন দিক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী, বিশিষ্ট ওয়ায়েজিন মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকীসহ দেশের প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন ওলামা মাশায়েখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, ইসলামী যুব আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমেদ সাকী, ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিশন সদস্য আল ইকবাল ও জেলা সভাপতি শেখ মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
স্টাফ রিপোর্টার, ১১ নভেম্বর ২০২৪