আধা কেজি গরুর মাংস আর ভালোবাসা

বিকাল বেলা গরুর মাংস কিনতে গেলাম। মাংসের ব্যাগ হাতে নিব ঐ সময় আমার পাশ দিয়ে এক আন্টি যাচ্ছিল হঠাৎ দাড়িয়ে পড়ল বয়স ৪৫ এর বেশি হবে।পরনে পুরাতন একটা সুতির শাড়ি।কিছুক্ষন দাড়িয়ে দেখলো।আমার আরও কাছে এসে জিঙ্গেস করলেন,” মাংস কত করে?” আমি বললাম ৪২০ টাকা।

উনি আাবারো তাকিয়ে থাকলো,বুঝতে পারলাম তিনি কিনতে চাচ্ছে কিন্তু টাকার জন্য পারছেন না হয়তো। আমি টাকা পরিশোধ করতেই দেখি চলে যাওয়ার জন্য ঘুরে দাড়ালেন।আমি ডাকলাম,আন্টি মাংস কিনবেন না?

আন্টি বললেন টাকা নেই আমার কাছে। বললাম, আমি যদি আপনাকে আধা কেজি মাংস কিনে দিই, নিবেন? আমার দিকে কৌতুহল দৃষ্টিতে তাকালেন, আনুগুনু করে বললেন তুমি দিলে নিব।

আমি তো মহাখুশি।দোকানিকে বললাম দেওয়ার জন্য।বাইরে যেহেতু তেমন কোনো দরকার ছিল না তাই ব্যক্তিগত টাকাও তেমন সাথে ছিল না।ঐ মুহূর্তে আমার ব্যক্তিগত অর্থে আধা কেজি মাংস কেনারই সামর্থ্য ছিল।

আন্টিকে বললাম কোথায় থাকেন? বললেন সামনেই।তারপর জিঙ্গেস করলাম, কিছু করেন আন্টি ? বললেন, মানুষের বাসায় কাজ করি,আমি কিছু না বলেই মাংসের প্যাকেট হাতে দিলাম।তার চেহারায় যে খুশি আমি দেখেছি তা সারা পৃথিবীর সম্পদের চেয়েও দামী আমার কাছে,আলহামদুলিল্লাহ!

তিনি আমার পিঠে হাত বুলিয়ে দিলেন,আমার হাত ধরবে ধরবে এমন করছিলেন,আমিই তার হাত ধরে ফেললাম।বললাম সাবধানে চলে যান আন্টি মাত্র কিছু সেকেন্ডের ব্যবধান, রিকশায় ওঠার আগে পেছনে তাকালাম,আন্টিকে আর চোখে পড়লো না,সে যাই হোক,আমার তো কিছুই দেওয়ার ক্ষমতা নেই, অন্তত আজ রাতে তার মাংস খাওয়ার ব্যবস্থাটা আল্লাহ আমার হাত দিয়ে করালেন আলহামদুলিল্লাহ।

সাবেক অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপির ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেয়া।

Share