চাঁদপুরেও ব্যাপক আতংক ছড়িয়ে উপকুল অঞ্চলর উপর দিয়ে দূর্বল হয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’। এতে করে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরসহ দক্ষিণাঞ্চলে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত থেকে ৩ নং-এ নেমে এসেছে। আর উপকূল অঞ্চলের পাশ্ববতী জেলা হওয়ায় চাঁদপুরে ৭ থেকে বিপদ সংকেত নেমে এসেছে ২ এ।
তবে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, পৌরসভা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো পূর্ব থেকে যথাযথ প্রস্তুতি নেয়ায় চাঁপুরের বড় কোনো দুর্ঘটান ঘটেনি।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ দুর্বল হয়ে বাংলাদেশ অত্রিক্রম করেছে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরসহ দক্ষিণাঞ্চলে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত থেকে ৩ নং-এ নেমে এসেছে। আর উপকূল অঞ্চলের পাশ্ববতী জেলা হওয়ায় চাঁদপুরে ৭ থেকে বিপদ সংকেত নেমে এসেছে ২ এ।
চাঁদপুর আবহওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মো. ফরিদ হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় চাঁদপুরে বৃষ্টির পরিমান রেকর্ড করা হয়েছে ১৩৬ মিলিমিটার। বাতাসের আদ্রতা ছিলো সর্বোচ্চ ৯৫ এবং সর্বনি¤œ ৯৪।’
শনিবার রাত থেকেই বৃষ্টির পরিমান কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে ‘রোয়ানু’ এর প্রভাবে চাঁদপুরে মেঘনা নদীর উপকুলীয় এলাকা এখন ঢেউ এ উত্তাল। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুন। জেলার ৪ উপজলোর প্রায় ৪০ চরাঞ্চলের মানুষদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদে রাখা হয়েছে। নৌ-চলাচল বন্ধ থাকার কারণে চাঁদপুর নৌ-টার্মিনাল ও হরিণা ফেরিঘাট এলাকায় প্রায় সহ¯্রাধিক যাত্রী আটকা পড়েছে।
শনিবার (২১ মে) দুপুর দেড়টায় মেঘনা নদীর মোহনা এলাকায় গিয়ে দেখাগেছে মেঘনা নদীর উত্তাল ঢেউ। নৌ-টার্মিনাল এলাকার আশপাশে বহু সংখ্যক লাইটার জাহাজ নিরাপদে রাখা হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শহর ও গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে।
চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, শুক্রবার বিকেল থেকেই চাঁদপুর থেকে সকল নৌ-চলাচল বন্ধ। মেঘনা নদী এখন উত্তাল। নৌ-টার্মিনালের আশাপাশে শত শত লাইটার জাহাজ আশ্রয় নিয়েছে। তবে চট্টগ্রাম ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় ৫শ’ লঞ্চ যাত্রী লঞ্চঘাট এলাকার আশপাশের বিদ্যালয়গুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের জন্য চাঁদপুর পৌরসভা থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস.এম. সরওয়ার কামাল বলেন, হাইমচর উপজেলার হাইমচর ইউনিয়নে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চাইতে দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে এই এলাকার কিছু ঘর বাড়িতে পানি উঠেছে। তবে এই পানি স্থায়ীভাবে থাকবে না। এছাড়া ইশানাবালাসহ আশপাশের এলাকায় কিছু ঘর বাড়ির চাল (টিন) বাতাসে উড়িয়ে নিয়েগেছে। তবে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উদয়ন দেওয়ান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, সদর উপজেলার হানাচর ইউনিয়নের চাঁদপুর শরীয়তপুর ফেরিঘাটে ১১টি যাত্রীবাহী বাস আটকা পড়েছে। এসব বাস যাত্রীদেরকে ইউপি চেয়ারম্যান আঃ ছাত্তার রাঢ়ী পাশ্ববর্তী চালতাতলী স্কুলে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় শুক্রবার থেকে জেলা প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি রেখেছে। লঞ্চ বন্ধ থাকায় চাঁদপুর নৌ-টার্মিনাল, মতলব উত্তর লঞ্চঘাট ও হরিণা ফেরিঘাটে যে সব যাত্রী আটকা পড়েছে। তাদেরকে নিরাপদে রাখা ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও সদর ও হাইমচর এলাকায় ১১হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে। তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি বলে এ কর্মকর্তা জানান।
প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম ও মাজহারুল ইসলাম অনিক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০:৩৫ পিএম, ২১ মে ২০১৬, শনিবার
ডিএইচ