আন্তর্জাতিক

আটকে পড়া ২৫ হাজার প্রবাসীর মালয়েশিয়ায় ফেরা অনিশ্চিত

করোনা ভাইরাসের কারণে আটকে পড়া ২৫ সহস্রাধিক বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকের মালয়েশিয়ায় ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাদের সহসা মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার।

বুধবার মালয়েশিয়ার সিনিয়র মন্ত্রী (প্রতিরক্ষা) দাতুক সেরি ইসমাইল সাবরি ইয়াকোব কুয়ালালামপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে অভিবাসন নীতিতে নিষেধাজ্ঞা বলবত্ থাকায় বাংলাদেশ থেকে প্রবাসী কর্মীদের এ মুহূর্তে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

বিদেশিদের জন্য মালয়েশিয়ার সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। সরকার বিদেশি কর্মীদের প্রবেশের অনুমতি দেবে না, যদি না তাদের অভিবাসন বিভাগের অনুমতি না থাকে। করোনা ভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসলে তখন নতুন করে অভিবাসন নীতি ঘোষণা করা হবে। ততদিন পর্যন্ত বিদেশিরা প্রবেশের অনুমতি পাবে না।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত ১৩ অক্টোবর থেকে রাজধানী কুয়ালালামপুর ও সাবাহ রাজ্যসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এর আওতায় লোকজনের চলাচল নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া নিজ জেলার বাইরে যাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস আক্রান্তের বিপুল সংখ্যাধিক্য থাকায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৩টি দেশের নাগরিকদের মালয়েশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ।

এতে বাংলাদেশকে উচ্চপর্যায়ের ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে মালয়েশিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে যে ২৩টি দেশে কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। তাই অনেকে ফিরতে চাইলেও তাদের অনুমতি দেব না।

ইমিগ্রেশন বিভাগের অফিশিয়াল ওয়েব পেইজে প্রকাশিত তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ভারত, রাশিয়া, পেরু, কলম্বিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো, স্পেন, আর্জেন্টিনা, চিলি, ইরান, সৌদি আরব, পাকিস্তান, ফ্রান্স, তুরস্ক, ইতালি, জার্মানি, ইরাক, ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়া। সিনিয়র মন্ত্রী দাতুক সেরি ইসমাইল সাবরি ইয়াকোব ইতিপূর্বে বলেছিলেন, করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি রয়েছে এরকম আরো দেশকে এ তালিকায় যুক্ত করবে সরকার এবং তাদের নাগরিকদের প্রবেশে বাধা দেবে। তবে জরুরি ক্ষেত্রে বা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যাদের সঙ্গে রয়েছে তাদের বিকল্প উপায়ে প্রবেশের অনুমতি দেবে কর্তৃপক্ষ।

দেশটির এ নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশে ফেরত আসা প্রবাসী কর্মীরা আবার কর্মস্থলে ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। এ নীতির আওতায় বাংলাদেশ ছাড়া অন্যান্য দেশের নাগরিকরা চাইলে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ থেকে বিশেষ অনুমতিপত্র নিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন। এদিকে বাংলাদেশে বসবাসরত মালয়েশিয়া প্রবাসীদের কেউ দালালের খপ্পরে পড়ে বা কারো কথায় প্ররোচিত হয়ে যাওয়ার চেষ্টা না করতেও সতর্ক করেছে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস।

এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মহামারির কারণে দেশে এসে আটকে থাকা ২৫ সহস্রাধিক অভিবাসী শ্রমিকের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ঢাকাস্থ মালয়েশিয়ার হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।

বার্তা কক্ষ,৫ নভেম্বর ২০২০

Share