চাঁদপুর

আজ ভোটযুদ্ধ : কে হচ্ছেন চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান?

আজ ২৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চলছে ভোটগ্রহণ। সাধারণ ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভোটে এই প্রথম জেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনী এলাকা পুরো চাঁদপুর জেলা। কেন্দ্র হচ্ছে ১৫।

এই নির্বাচনে বিএনপি, জাতীয়পার্টিসহ অন্যান্য দলের পক্ষে কোনো প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। এসব দলের পক্ষে কোন প্রার্থী মনোনয়নপত্রও জমা দেননি।

ফলে রেফারি আর একই দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে জমে উঠবে জেলা পরিষদ নির্বাচন। এ ধরনের নির্বাচন নতুন অভিজ্ঞতাও বটে। যারা চেয়ারম্যান প্রার্থী তারা ৩ জনেই আবার চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান সহ-সভাপতি।

তিন প্রার্থীই প্রতিমন্ত্রী মর্যাদা সমমানের পদের জন্য আজ চূড়ান্ত ভোটযুদ্ধে । এ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব অ্যাড. নুরুল আমিন রুহুল ঘোড়া প্রতীক, আলহাজ্ব ওসমান গণি পাটওয়ারী মোবাইল প্রতিক ও আলহাজ্ব মো. ইউসুফ গাজী আনারস প্রতিক নিয়ে পুরো জেলায় ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন।

তবে গণমাধ্যমে তাদের আলাদা আলাদা প্রতিক্রিয়া দেখে অনেক ভোটারদের মাঝেও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্যে দলীয় সমর্থন নিয়ে প্রচার হয় স্থানীয় গণমাধ্যমে। এসব বিষয় স্পষ্ট করতে কোন কোন প্রার্থী তাদের স্বপক্ষের বক্তব্য নিয়ে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে একাধিক সাংবাদিক সম্মেলন করেন।

বেশ কিছু সংখ্যক ভোটারের সাথে আলাপ করে জানাগেছে, তারা অনেকেই আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। তাই দলের দিক নির্দেশনা মেনেই তারা যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন। তবে কাকে ভোট দিবেন স্পষ্ট ভাবে বলতে নারাজ তারা।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, জেলার ৭ পৌরসভা ও ৮৯টি ইউনিয়নকে জেলা পরিষদের ১৫টি ওয়ার্ডে বিভাজন করা হয়েছে।

এ ১৫টি ওয়ার্ডকে আবার পাঁচটি সংরক্ষিত ওয়ার্ড করা হয়েছে। এই ১৫টি ওয়ার্ডেরই মোট ভোটার হচ্ছে ১২৬০ জন। পৌরসভার মেয়র, সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্যরা এ নির্বাচনের ভোটার।

প্রতি কেন্দ্রে একটি করে ভোটকেন্দ্র থাকবে। সে হিসেবে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫। ভোট কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা হবে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

কেন্দ্রগুলো হচ্ছে: ১. মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষ, ২. লুধুয়া উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ, ৩. মতলব দক্ষিন উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষ, ৪. সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ৫. সদর উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষ, ৬. হাইমচর উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষ, ৭. ফরিদগঞ্জ খাজুরিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, ৮. ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষ, ৯. ধানুয়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, ১০. হাজীগঞ্জ বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয়, ১১. আলীগঞ্জ পি.টিআই, ১২. শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষ, ১৩. সূচীপাড়া হাইস্কুল, ১৪. তেগুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং ১৫. কচুয়া উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষ।

এদিকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন গ্রহণের চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

এর আগে নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রস্তুতি সভায় জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মো. আব্দুস সবুর মন্ডল বলেছেন, ‘এ নির্বাচনে ভোটাররা খুবই শক্তিশালী। তারা সরকারি আইন ধারা নিয়ন্ত্রিত জন প্রতিনিধি। তাদের কেউ হুমকি ধমকি দিবে এটা মেনে নেয়া যায় না। সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন নিশ্চিত করণে আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট গ্রহণে আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে।’

একই সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেছেন, ‘কোন ভোটার যদি হুমকির শিকার হন। তাহলে তিনি নিজে এসে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে হবে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। এ নির্বাচনে ভোটাররা অনেক শক্তিশালী। কারণ তারা সরকারেরই একটি অংশ। প্রত্যেক ভোটার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।’

প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে কে হচ্ছেন চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সেটি শুধুমাত্র দেখার অপেক্ষা।

প্রতিবেদক- মাজহারুল ইসলাম অনিক
: আপডেট, বাংলাদেশ সম ৩: ০০ এএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ

Share