‘ফাগুনের আগুন লাগে তোমার হৃদয়ে, বলি হে সখা সেজেছো কেমন নতুনের আগমনে।”
ঋতুরাজ ‘বসন্ত’,এ ঋতুতে প্রকৃতি কন্যা নতুন রুপে সজ্জিত হয়। বিশেষ গাছে নতুন কচি পাতার আগমন ঘটে। শিমুল,পলাশ আর কৃষ্ণ চুড়ার আবাসে চারিদিক লাল রাঙা হয়ে পড়ে।
বসন্তে রমণীরা হলুদ-লালচে শাড়ীর সংমিশ্রণে নিজেদেরকে নতুনত্বর ছোঁয়া দান করে।
বাসন্তী শাড়ীতে অপরুপে সজ্জিত পকৃতির সাথে রমনীরা ও নতুন রুপে নিজেকে সাজিয়ে তোলে।
ছেলেরা সাদা পাঞ্জাবী আর শিশুরা রং-বে’রঙের পোশাকে নিজেকে সজ্জিত করে তোলে।
“বাঙালীর, বার মাসে তের পার্বণ”
সংস্কৃতির এক অপার নিদর্শন বসন্ত বরণ।
ফুল ফুটুক আর না ই ফুটুক -বসন্ত বরণে বাঙালী সর্বদা ই সচেষ্ট।
“বসন্ত বাতাসে সই গো, বসন্ত বাতাসে’
তোমার বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে”
‘বসন্তের প্রাক লগ্নে আম্র কাননে দেখা মেলে নতুন কলির।
দেখা মেলে কচি পাতার শিহরন।এ সময় কবি প্রতিভার উন্মেষ ঘটে।’
ফাল্গুনের প্রথম প্রহরে রক্তিম লালিমা নিয়ে সূর্য প্রকৃতিকে নবরূপে সজ্জিত করে।
আম্রকাননে ভ্রমরের মেলাবন্ধন লক্ষ্য করা যায়।
সকাল, সকাল কোকিলের কুহু কুহু গানে মুখরিত চারিপাশ।
‘রবি ঠাকুর’ তার কবিতায় লিখেছেন,আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।
তব অবগুন্ঠিত কুন্ঠিত জীবনে কোরো না বিড়ম্বিত তারে।
“নজরুল ইসলাম” লিখেছেন, “এলো বনান্তে বসন্ত।
বনে বনে মনে মনে রং ছড়ায় রে,চঞ্চল তরুণ দুরন্ত।
শীতের হিমেল হাওয়ার পড়শ শেষে এলো আজ বসন্ত।
সাথে বছর ঘুরে এলো আবার ভালবাসার সংস্পর্শ।
“ভালোবাসা তুমি রবি ঠাকুরের অজস্র কবিতা।ভালবাসা তুমি নজরুলের বীণার সুরের মুর্ছনা।
ভালোবাসা তুমি গোলাপের পাপড়ির মত শত, শত ছেড়া পাতা।তুমিই সে যে কিনা অজস্র মানুষকে ছলনায় বিমোহিত করো-ভালবাসা তুমি অপার সৌন্দর্যে মুড়ানো।ভালবাসা তুমি ফুলের পাপড়ির মত। ভালবাসা তুমি শুধুই নিরাশা!”
ভালবাসা দিবসে ভেবেছিলাম কিছুই লিখবো না।না লিখলে যে আবার ভালবাসার ষোল কলা পূর্ণ হবে না!
ভালবাসা শুধুই লোক দেখানো নয়,ভালবাসা আত্মার এক নিবিড় সম্পর্ক।
ভালোবাসে না এমন লোক খুব কমই আছে পৃথিবীতে। ভালোবাসে মনের সকল অন্ধকারকে দূর করে আলোর সন্ধান এনে দেয়।
ভালোবাসে জন্য কোন দিবস লাগে না! তবুও আমরা ভ্যালেন্টাইন এর প্রেমের কাহীনিকে অবলম্বন করে ভালবাসার জন্য দিনক্ষণ পেতে রেখেছি।
ভালোবাসার জন্য অনন্ত কালের প্রয়োজন নেই! এটি খুবই আবেগ আর স্নেহ মাখা বুলি। ভালোবাস শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। ভালোবাসাটা জগৎ জুড়ে এক মায়ার বন্ধন। বাবা-মা,আত্মীয় স্বজন সবই ভালবাসার অংশ।
ভালোবাসা অন্য রকম অভিজ্ঞতা। কেউ ভালোবেসে হাসে, কেউ বা ভালোবেসে হাসায় অন্যজনকে। ভালোবাসা দিবসে কেউ ছুটে আপন জনের সান্নিধ্যে,কেউ আবার ভালোবাসা টানে ছুটে যায় ছিন্নমূলের কাছে।
কেউ ভালোবাসে, কেউ বাসায়। এই ভালোবাসা-বাসির মাধ্যখানে আবার কেউ এসে দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়। এমন দিকে না’ই যেতে চাই। পবিত্র ভালোবাসার জয় দেখতে আগ্রহী মোরা প্রায়।
ভালবাসা পরিপূর্ণ হোক আপনার জীবন।”ভালবাসা ভালবাসে শুধুই তাকে,ভালবেসে ভালবাসায় বেঁধে যে রাখে”
হীনমন্যতাকে দূর করে সত্যিকারের ভালোবাসায় নিমর্জিত হোক তরুণরা। ভালোবাসা ভরে উঠুক প্রানবন্ত আপনার জীবন।
ভালোবাসা নিবেদন করছি আমার “মা” কে যার জন্য পৃথিবীর আলো দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। ভালোবাসা নিবেদন করছি আমার পিতাকে। ভালোবাসা নিবেদন করছি আমার আত্মীয়, স্বজন,পরিজন,ছিন্নমূলে বেড়ে উঠা শিশু-কিশোরদের, শ্রমজীবি মানুষদের, বিদেশে কর্মরত প্রবাসীদের, কৃষক, জেলে, কামার, কুমারসহ দেশের অনাহারে, অনিদ্রায় রাত্রিযাপনকারী সকলদের।
ভালোবাসায় আপনার আগামী দিনগুলোর অগ্রগতি ও সাফল্য কামনায়।
লেখক-রিফাত কান্তি সেন, সাংবাদিক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১: ১০ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, সোমবার
ডিএইচ