‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প’র প্রথম ব্যাচে কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণ কাজ আজ (৩০ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরইমধ্যে প্রকল্প এলাকা জুড়ে গড়া হয়েছে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার বলয়।
পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের যুগে প্রবেশের মধ্যে দিয়ে রুপপুরের আলোয় আলোকিত হবে দেশ। এ নিয়ে জেলার সর্বত্র বিরাজ করছে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা। ব্যবসায়ীদের মাঝেও বইছে আনন্দের বন্যা।
এ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে ঈশ্বরদী বিমান বন্দর থেকে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প’ এলাকা ও পৌর এলাকার প্রধান সড়কসহ ১২ কিলোমিটার পথ জুড়ে চলছে বর্তমানে তোরণ নিমার্ণ ও রাস্তা সংস্কারের পাশাপাশি রূপপুর প্রকল্প এলাকায় বৃক্ষ রোপন সহ সৌন্দর্য্য বর্ধন কাজ।
বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়, রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি কর্পোরেশন (রসাটমের) নেতৃত্বে ২০১৩ সালে শুরু হয় দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প কাজ।
প্রকল্প পরিচালক ড. শওকত আকবর জানান,নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হয়েছে ৫ হাজার ৮৭ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় বা শেষ পর্যায়ের কাজ।
এ প্রকল্প পরিচালক আরো জানান, প্রথম ব্যাচের কংক্রিট ঢালাই এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রকল্পটির জেনারেল কন্ট্রাক্টও রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমানবিক শক্তি কর্পোরেশন রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্স্রি লিখাচোভ সহ অন্যান্য গণমান্য ব্যক্তিবর্গ ও অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এ প্রকল্প নির্মাণে প্রতিদিন রাশিয়ার বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশি মিলে প্রায় ১ হাজারের বেশি কর্মী কাজ করছেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও চালুর সম্ভাব্যদিন ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জাতীয় গ্রিডে বাড়তি ২,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হবে।
সূত্র মতে, রূপপুর প্রকল্পে রিঅ্যাক্টর ঘিরে রয়েছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয়। রাশিয়ান ফেডারেশনের নির্মিত প্রযুক্তির অ্যাকটিভ ও প্যাসিভ সেফটি সিস্টেমের কারণে এ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত।
এদিকে স্থানীয় এমপি, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু জানান, ঈশ্বরদীবাসী প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানকে সফল করতে প্রশাসনিক পর্যায়ে এবং দলীয় সভা নেত্রীর আগমন উপলক্ষে দলীয় কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন হয়েছে।
এ ছাড়া গতকাল স্থানীয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী লাল সবুজ কাপড় পড়ে আই লাভ রুপপুর লেখা প্রদর্শন কর।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্ম্পকে পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির (পিপিএম) জানান, গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে, ব্লক রেড চেক পোষ্ট জোরদার করা হয়েছে। আমরা কোন ধরণের থ্রেট অনুমান করছি না,৩০ তারিখ উপলক্ষে সেখানে এসএসএফ থাকবে,পিজিআর থাকবে, রূপপুর পারমানবিক কেন্দ্রটি একটা কেপি আই অন্তভূক্ত ফলে সেনাবাহিনীর একটা ভূমিকা রয়েছে। এর পাশাপাশি আমরা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ভূমিকা নেবো। মূলত: প্রকল্প এলাকা জুড়ে গড়া হয়েছে প্রধান মন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার বলয়।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে পাবনা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এর পরিচালক সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে পাবনার ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে দলমত নির্বিশেষে তা অভুতপূর্ণ। এদিকে রূপপুর এর আলোয় আলেঅকিত হবে সারা বাংলাদেশ। এটার কৃতিত্বের দাবি দার একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন মানেই মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রের থেকে উন্নত রাষ্ট্রের পথের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। তাঁর আগমন মানেই নতুন দিগন্তের সুচনা।
অপরদিকে স্থানীয় শিল্প ব্যবসায়ী আলী মতুর্জা বিশ্বাস সনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনে আমরা অত্যান্ত আনন্দিত। আমরা মনে করছি রূপপুরের আলোয় সারাদেশের বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হবে। পাশাপশি দেশের অর্থনৈতিক গতি সমৃদ্ধ হবে।
বার্তা কক্ষ
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯:১০ এএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ