শীর্ষ সংবাদ

আজ থেকে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ৪টি ওয়ার্ড লকডাউন

করোনাভাইরাসে আক্রান্তের দিক থেকে সারা দেশে কুমিল্লার অবস্থান চতুর্থ। এ জেলায় আশকাজনক হারে বেড়েই চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সাথে মৃত্যুর হারও। বুধবার পর্যন্ত এ জেলায় করোনা শানাক্তের পরিমান দাঁড়িয়েছে প্রায় আড়াই হাজার। শুধু কুমিল্লা সিটিকর্পোরেশন এলাকাতেই এই শানাক্তের পরিমান ৫শ’রও বেশি। প্রতিদিন বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। তাই সংক্রমণ প্রতিরোধে ১৯ জুন থেকে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ৪টি ওয়ার্ডকে আবারও লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

করোনা সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধির ফলে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক জরুরী সভা আহবান করা হয়। ওই সভা থেকে সিটি কর্পোরেশনের ০৩ নং, ১০ নং, ১২নং ও ১৩ নং ৪ এই ওয়ার্ডকে লকডাউনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভা শেষে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

তিনি জানান, এসকল ওয়ার্ডে ১৯ জুন শুক্রবার রাত ১২ টা থেকে ১৪ দিনের লকডাউন কার্যক্রম শুরু হবে। যা আগামী ৩ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন বলবদ থাকবে।

এদিকে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ৪টি ওয়ার্ডেকে আবারও লকডাউন ঘোষণার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নগরবাসী। তবে, এবারের লকডাউনে কঠোরতা আরোপ এবং সবগুলো ওয়ার্ডকেই এর আওতায় আনার দাবি নগরবাসীর। সেই সাথে এলাকা ভিত্তিক এই লকডাউন নিয়েও চিন্তিত তারা। কারন, কুমিল্লা সিটির ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪টি মাত্র ওয়ার্ডেকে লকডাউন দিয়ে কতোটা সুফল আসবে তা নিয়েও ভাবছেন নগরবাসী। তবে, এবারের লকডাউন কালে প্রশাসনের কাছ থেকে আগের চেয়ে কঠোরতা আশা করছেন সবাই।

এ ব্যাপারে সামাজিক সংগঠন ঐতিহ্য কুমিল্লা এর নির্বাহী সদস্য আহসান হাবিব বলেন, লকডাউনের এ সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে, আমরা সন্দিহান যে, ২৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ৪টি ওয়ার্ডকে লকডাউন করে কতোটা সুফল বয়ে আনবে। কেননা, এই চারটি ওয়ার্ডে যঞন লকডাউন শেষ হবে তখন অন্যান্য ওয়ার্ডের লোকজন আবারও সেগুলোতে যাতায়ত শুরু হবে এবং সেই ওয়ার্ডগুলোর মানুষগুলোও অন্য ওয়ার্ডে যাতায়ত করবে। এতেকরে রোগসংক্রমণ আশঙ্কা থেকেই যায়।

তবে, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর জানালেন, এবারের লকডাউন সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী কঠোরতা আরোপ করা হবে। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড গুলোতে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। বাইরের কেউ প্রবেশ করতে কিংবা কাউকে বের হতেও দেয়া হবে না। এখানকার সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলেও জানালেন জেলা প্রশাসক।

প্রসঙ্গত, বুধবার রাত পর্যন্ত কুমিল্লা জেলায় করোনা পজেটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে ২২শত, মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ৬৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ৬৫১ জন।

উপজেলাওয়ারী আক্রান্ত হলো কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে ৫১১ জন, দেবীদ্বারে ২৩৯ জন, মুরাদনগরে ১৮৫ জন, চান্দিনায় ১৫৬ জন, লাকসামে ১৬২ জন, চৌদ্দগ্রামে ১৭৯ জন, বুড়িচংয়ে ১২৭ জন, নাঙ্গলকোটে ১০১ জন, আদর্শ সদরে ৯২ জন, দাউদকান্দিতে ৮৭ জন, সদর দক্ষিনে ৫৫ জন, তিতাসে ৬২ জন, ব্রাহ্মনপাড়ায় ৪৯ জন, বরুড়ায় ৬০ জন, মনোহরগঞ্জে ৪৭ জন, হোমনায় ৪৫ জন, মেঘনায় ২৪ জন, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ২০ জন ও লালমাইয়ে ১৬ জন।

কুমিল্লায় বুধবার রাত পর্যন্ত করোনা ভাইরাস এর নমুনা সংগ্রহ ১৫০০১ জন ও রিপোর্ট পাওয়া গেছে ১৩৪৮৩ জনের।

প্রতিবেদক:জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল,১৯ জুন ২০২০

Share