আজ সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও হিন্দু ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের মহাঅষ্টমী স্নানযাত্রা। এদিন শহরের পুরাণবাজার হরিসভা মন্দির সংলগ্ন মেঘনা নদীতে মন্ত্রপুতঃ হয়ে স্নান অনুষ্ঠিত হবে। ধর্মীয় এই আয়োজন সফল করার জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা করা হয়েছে বলে অবহিত করেছেন চাঁদপুর জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
সংগঠনের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক গোপাল চন্দ্র সাহা জানান, গত ২ বছর বৈশ্বিক করোনার মহামারির কারণে সকল প্রকার ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায়, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাঅষ্টমী স্নান যাত্রাও বন্ধ ছিল। আনুষ্ঠানিক ভাবে কেউ আর স্নানযাত্রায় অংশ নিতে পারেননি। সকলেরই প্রার্থনা ছিল আমরা যেন করোনা থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি। এ বছর করোনার প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমে যাওয়ায়, আমরা অন্যান্য বছরের ন্যায় পুরাণবাজার হরিসভা মন্দির সংলগ্ন মেঘনা নদীতে স্নানযাত্রার আয়োজন সম্পন্ন করেছি। এদিন ভোরের আলো ফোটার আগেই ব্রহ্ম মহুত্বে ব্রহ্মপুত্র পূজা, গঙ্গাপূজাসহ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্নানের স্থানকে পুতপবিত্র করে গড়ে তোলা হবে। পরে শুরু হবে স্নানযাত্রার আনুষ্ঠানিকতা। পূজার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন হরিসভা মন্দির কমপ্লেক্সের অধ্যক্ষ কেদার নাথ চক্রবর্তী।
নেতৃবৃন্দরা আরো জানান, বিষয়টি সম্পর্কে জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, পৌরসভার মেয়র, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস, বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থাগ্রহণের জন্যে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্তবৃন্দকে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে স্নানযাত্রায় অংশ নেয়ার জন্যে বিনীত ভাবে অনুরোধ জানান এবং শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ ও সাংগঠনিক সম্পাদক গোপাল চন্দ্র সাহা।
উল্লেখ: প্রতিবছরই চৈত্রমাসের মহাষ্টমী তিথিতে পাপ মোচনের নিমিত্তে সনাতন ধর্মাবলম্বী সকল বয়সের নারী-পুরুষ গঙ্গাস্নান করেন মন্ত্রপুত হয়ে। তাদের বিশ্বাস, এই স্নানের মধ্য দিয়ে জানা অজানা সকল পাপ থেকে তারা মুক্তি লাভ করবেন।
৮ এপ্রিল শুক্রবার রাত ৯টা থেকে মহাষ্টমী তিথি শুরু হয়ে আজ ৯ এপ্রিল শনিবার রাত ৯টা পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে বলে জানা যায়। তাই শনিবারেই স্নান যাত্রা সম্পন্ন করার দিন হিসেবে নির্ঘন্ট করা হয়। মূলত দেশের বৃহৎ অষ্টমীর স্নান নারায়নগঞ্জের লাঙ্গলবন্দেই হয়ে থাকে ব্যাপকভাবে। কিন্তু সময় ও দূরত্বের কথা চিন্তা করে অনেকেই নদী বা খালের জলে স্নান সম্পন্ন করে থাকেন মনের ভক্তি আর বিশ্বাস নিয়ে।
প্রতিবেদক:আশিক বিন রহিম, ৮ এপ্রিল ২০২২