নাজনীন আক্তার হ্যাপী :
আজ কালকার আঙ্কেল-আন্টিদের সমস্যা কি? বা কোথায়? তারা দিন দিন এমন অবুঝ হওয়ার প্রতিযোগীতায় নামলে তো সমস্যা!
ছেলেমেয়ে বড় হলে, বিয়ের বয়স হলে বিয়ে দেওয়া যাবে না(!),কিন্তু কেন?
কারণ হিসাবে বেশিরভাগ বাবা-মা বলে থাকেন-
১)পড়াশোনা-ই এখনো শেষ হয়নি!আর বিয়ে!
২)মাত্র তো পাশ করলো,ভাল একটা চাকরি বা ব্যবসা শুরু করুক,তারপর না হয় আস্তে ধীরে ভাল একটা মেয়ে দেখে বিয়ে করিয়ে দেব।(!)
৩)বিয়ে তো শুধু দিলেই হবে না,নিজের পায়ে না দাড়িয়ে,ইনকামের ব্যবস্থা না করলে বউকে কি খাওয়াবে?
৪)আগে ক্যারিয়ার,তোমার ক্যারিয়ার ঠিক তো সব ঠিক তখন দেখবে যোগ্য পাত্ররা লাইন দিয়েও কূল পাবে না।শ্বশুরবাড়ির লোক মাথায় করে রাখবে।(!)
এরকম হাজারটা কারণ!
আবার কোন ছেলে/মেয়ে যদি কোনরকম লজ্জা ফেলে বলে যে বিয়ে করব, তাহলে তো আর কথায় নেই।তখন –
১)প্রথমত একদল আঙ্কেল-আন্টি হেসে কুটিকুটি হয়ে যাবে। বিষয়টা এমন যেন,এর চেয়ে মজার জোক জীবনে কখনো শোনেন নি।
২)আরেকদল আঙ্কেল-আন্টি এতটাই অবাক হবে যে,চোখের পলক ফেলতেই হয়তো ভুলে যাবে।
৩)আরেকদল আঙ্কেল-আন্টির কাছে তো ২১ বছর বয়সের বেশি বয়সের ছেলেমেয়েরাও দুধের শিশু।তাদের ধারণা আমার ছেলেমেয়ে তো ঠিকমত নিজের হাতে খেতেও পারে না। (!)
এবার সমস্যার কথায় আসি-
১)বাবা-মায়ের এমন ভাবনা দ্বারা দুনিয়াকেই প্রাধ্যান্য দেওয়া হচ্ছে।এর ফলাফল বেশি ভয়নক।অন্তরে দুনিয়ার চিন্তা থাকলে এর চেয়ে ক্ষতিকর আর কিছু আছে বলে হয় না।
“পার্থিব জীবন ক্রীড়া ও কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পরকালের আবাস পরহেজগারদের জন্য শ্রেষ্ঠতর। তোমরা কি বুঝ না?” (সূরা আল-আনতাম, আয়াত-৩২)
২)আর রিযিকের চিন্তা কেন? রিযিকদাতা একমাত্র আমার আল্লাহ।কিভাবে বলেন যে,বউকে কি খাওয়াবি? আপনাকে কে খাওয়াই? ভুল করেও বলবেন না যে,আপনার স্বামী আপনাকে খাওয়াই।রিযিকের ব্যবস্থা কেবল এক আল্লাহর হাতে।
“এমন অনেক জন্তু আছে,যারা তাদের খাবার সঞ্চিত রাখে না। আল্লাহ রিযিক দেন তাদেরকে এবং তোমাদেরকে। তিনি সর্বশ্রোতা,সর্বজ্ঞ।”(সূরা আল-আনকাবুত, আয়াত-৬০)
৩)বিয়ে দিতেই সমস্যা? আর সন্তানেরা প্রেম করলে,ব্যাভিচার করলেও সমস্যা নেই(?)।যেই বয়সে বিয়ে করে ঈমান হেফাজত করতে হবে সেই বয়সে ব্যভিচারকে সবুজ সংকেত দেওয়া হচ্ছে।এর কারণ হল বিয়ের প্রতি বাবা-মায়ের গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে।
আমাদের তৈরি করা এ শিক্ষা ব্যবস্থার ভার টানতে ও সমাজ দেখানো ক্যারিয়ার তৈরি করার দৌড়ত্বে অর্ধেক বয়স তো চোখের পলকেই শেষ হয়ে যায় এবং গুনাহ যা করার তাও করা হয়ে যায়।সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে করতে চান? করান।তো এর সাথে বিয়ের সাথে কি সম্পর্ক ? বরং বিয়ে করলেই সবকিছু সহজ,সুন্দর,পবিত্র।
আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বিয়ের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং নবী-রাসূল বিয়ের গুরুত্বও বুঝিয়েছেন।বিয়েটা হালকা-পাতালা বিষয় নয়।দ্বীনের অর্ধেক।আর এই বিষয়ে গুরুত্ব না দেওয়ার মানে হল,আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশকে গুরুত্ব না দেওয়া।
বাবা-মায়ের-ই দায়িত্ব,সন্তানদের বিয়ে দেওয়ার জন্য আগ্রহী হওয়া। না হলে হাশরের ময়দানে ঠিকই জবাবদিহি করতে হবে।আল্লহকে ভয় করুন।
“হে মানব জাতি! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর এবং পিতা পুত্রের কোন কাজে আসবে না এবং পুত্রও পিতার কোন উপকার করতে পারবে না। অতএব,পার্থিবজীবন যেন তোমাদের ধোঁকা না দেয় এবং আল্লাহ সম্পর্কে প্রতারক শয়তানও যেন তোমাদেরকে প্রতারিত না করে। ” (সূরা লোকমান, আয়াত-৩৩)
(লেখক, সাবেক অভিনেত্র, সূত্র ফেসবুক স্ট্যাটাস)