সারাদেশ

আগের দিন এসএমএস : পরদিন চাকরিচ্যুত শতাধিক কর্মকর্তা

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শতাধিক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একদিন আগে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে পরদিন বেতন ছাড়াই তাদের বরখাস্তপত্র ধরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাকরিচ্যুতরা। তালিকা তৈরি করে এই কর্মীদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

এদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের একজন কর্মকর্তা বলেন, অন্যায়ভাবে আমাদের অনেককে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। আট বছর ধরে আমি স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে চাকরি করছি। গতকাল শুক্রবার (২৪ জুলাই) অফিস থেকে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে বরখাস্তপত্র নিতে ডাকা হয়।

শনিবার ২৫ জুলাই অফিসে গেলে পাওনাদি ছাড়াই বরখাস্তপত্র হাতিয়ে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে আমার স্বামীর চাকরি চলে গেছে। এখন বিনা নোটিশে আমার চাকরিও চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয়েছে। প্রয়োজনীয় বাজার করা এবং বাসাভাড়াও দিতে পারছি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাকরিচ্যুত আরেক কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করছিলেন তিনি। হঠাৎ করে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে তাদের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানানো হয় এবং পরে কাগজ ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। এমনিতে চার মাস ধরে ঠিকমতো বেতন দেয়া হচ্ছে না। তার ওপর বেতন ছাড়া ছাঁটাই হওয়ায় চাকরিচ্যুতরা মহাবিপদের মধ্যে পড়েছেন।

আরেক ভুক্তভোগী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিনা কারণে ছাঁটাই করতে তালিকা করা হয়েছে। সবাইকে ডেকে বরখাস্তপত্র হাতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। গত চার মাস থেকে অর্ধেক বেতন দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এখন বেতন ছাড়াই সবাইকে ছাঁটাই করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে চাকরিচ্যুতরা পরিবার নিয়ে বিপদে পড়েছেন।

এ বিষয়ে পক্ষ থেকে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ফাতিনাজ ফিরোজকে ফোন করা হলে তিনি রেজিস্ট্রারের সাথে কথা বলতে বলেন। রেজিস্ট্রার আব্দুল মতিনকে একাধিকবার কল দিলেও তারা সাড়া মেলেনি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সুপা সাদিয়া বলেন, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের ধানমন্ডি এবং সিদ্ধেশ্বরীতে মোট দুটি ক্যাম্পাস রয়েছে। আমাদের ইউজিসি থেকে নির্দেশনা আছে, ধানমন্ডি ক্যাম্পাস পুরোপুরি গুটিয়ে সিদ্ধেশ্বরী চলে আসার জন্য। তাই একটা ক্যাম্পাসে একই বিভাগে অধিক কর্মী নিয়োগ হওয়ায় এবং অন্যান্য কিছু কারণে কিছু কর্মীকে দুঃখজনকভাবে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর জন্য বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেভিনিউর ওপর বেশ চাপ পড়েছে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজন হলে এদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেন।

বার্তা কক্ষ,২৬ জুলাই ২০২০

Share