আগামীতেও মাধ্যমিকে ভর্তি লটারির মাধ্যমে: শিক্ষামন্ত্রী

ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই লটারির মাধ্যমে ২০২২ সালের মতো আগামীতেও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থী ভর্তির ডিজিটাল লটারি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

নামি-দামি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য অভিভাবকদের যুদ্ধ থামাতে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক চাপ কমিয়ে প্রতিষ্ঠানে মেধার সমন্বয় ঘটাতে আগামীতেও ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে বলে জানান ডা. দীপু মনি।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা সমতা আনতে এই ব্যবস্থাকে আমরা অ্যাড্রেস করতে চেয়েছি। বাবা-মা’দের ফোকাস শিক্ষার্থী কত নম্বর পেলো, কী ফলাফল হলো, তার ওপর যত নজর। কিন্তু কী শিখলো কী শিখলো না, এর (লটারি) মধ্য দিয়ে আমরা তা অ্যাড্রেস করতে চেয়েছি। নামি-দামি স্কুলে ভর্তি করবার অসুস্থ প্রতিযোগিতা বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি। আবার সেই ভর্তি করাতে গিয়ে অনেকে অনৈতিক পথ বেছে নিতে পিছ পা হন না। এসব কিছু মাথায় রেখে এটি আমরা চিন্তা করেছিলাম। সারা দুনিয়ার আধুনিক ব্যবস্থায় মনে করা হয়, বিভিন্ন ধরনের মেধার শিক্ষার্থীরা যখন একটি জায়গায় থাকে তখন সেটা শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো, প্রতিষ্ঠানের জন্যও ভালো, এসব বিষয় মাথায় রেখে, লটারির মাধ্যমে ভর্তি এবং ক্লাসের রুল নম্বর তুলে দিয়ে শিক্ষার্থীর ইউনিক আইডি করা—এসব বিভিন্ন বিষয়ে আমরা চিন্তা করছিলাম। ’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে যখন স্বাস্থ্যের বিষয়টি বড় করে সামনে চলে এলো, পরীক্ষা নিলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। তখন আমরা চিন্তাগুলোকে কাজে লাগিয়েছি। তখন হয়তো কোনও অভিভাবকের সন্তান নামি-দামি স্কুলে ভর্তি করাতে পারতেন, পারেনি। তাদের কেউ কেউ মনোক্ষুণ্ণ হয়েছেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে জনগণ এটিকে ভালো বলেছেন। কারণ এর মধ্যে মেধার সমতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে যে অনভিপ্রেত চিন্তা অসুস্থ প্রতিযোগিতা, সেটি বন্ধ হয়েছে।’

দীপু মনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর ভীষণ মানসিক চাপ থাকতো। বাবা-মায়ের পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পারলে প্রচণ্ড রকম মানসিক চাপের মধ্যে পড়ে। এটি শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য কাম্য নয়, তার সঙ্গে কোচিং বাণিজ্যের একটি বড় ব্যাপার ছিল। ভর্তির কারণে কোচিং অনেকাংশে বন্ধ হয়েছে। তাই গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় আমরা ২০২২ সালের মতো আগামীতেও সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইন লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করে ভর্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এবারই প্রথম জেলা সদর ও মহানগর পর্যায়ের বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে কেন্দ্রীয় লটারির আওতায় আনা হয়েছে। এর বাইরে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারাও লটারির মাধ্যমে ভর্তি করবেন, তবে তারা নিজেরা লটারি করবেন, সেখানে শিক্ষা অধিদফতরের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন।

শিক্ষামন্ত্রী ল্যাপটপে ভর্তির নির্ধারিত সফটওয়ারে প্রবেশ করে বাটনে চাপ দিয়ে ডিজিটাল লটারির উদ্বোধন করেন। ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ফারুক উপস্থিত ছিলেন।

Share