চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থানায় আগস্ট মাসের পুলিশ অভিযানে অন্তত সাড়ে ৩ হাজার পিস ইয়াবা ও ২০ বোতল ফেন্সিডিলসহ ২৯ জন আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১৪ টি মামলা দায়ের হয়েছে।
অভিযানে ৩ হাজার ৪শ’ ৮৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২০ বোতল ফেন্সিডিল ও ২৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছে ১৬ লাখ ৪৫ হাজার ২শ’ ৫০ টাকা। হাজীগঞ্জ থানা সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এর মধ্যে গত ২৭ আগস্ট হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান ও মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় পৌরসভার টোরাগড় গ্রামের আরব আলী বেপারী বাড়ির হেলাল কবিরের ছেলে মো. কামরুল হোসেন আরিফ(২৮) কে ৫৫ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়।
হাজীগঞ্জ বাজারের কাপড়িয়া পট্টি মতলব ক্লথ স্টোরের সামনে রাস্তার উপর মাদক বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করা কালে এই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ।
একই দিনে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোং জাবেদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে হাজীগঞ্জ পৌরসভার ০৪ নং ওয়ার্ড জয়নাল ম্যানসন (মালিবাড়ি) এর ৪র্থ তলার ১টি আবাসিক ইউনিট থেকে প্যাকেট করার সময় হাতে-নাতে ১৮৩০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করে।
এসময় মাদক সরবরাহের সরঞ্জামাদিসহ উপজেলার ৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের সোনাইমুড়ি তপদার বাড়ির মাকসুদ হাসান সোহেল(৪৫) ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপুর বৈরাগী বাড়ির মো. আমিন(৩৮) আটক করা হয়।
২৬ আগস্ট হাজীগঞ্জ থানা উপ-পরিদর্শক আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে পেন্সিডিল মামলার আসামী হাজীগঞ্জ পৌরসভার কাসারী বাড়ির মোজাম্মেল হোসেন হিমন(২২) কাসারী ও ৯০ পিস ইয়াবা সহ শাহরাস্তি পৌরসভার ছোট হাজী বাড়ির মৃত নূর মোহাম্মদের ছেলে মো. হারুন(৪০) গ্রেফতার হয়েছে। হাজীগঞ্জ থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই দিনে সোনাইমুড়ি মিয়াজী বাড়ির মৃত বতু মিয়াজীর ছেলে একাধিক মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত এবং মাদক ব্যবসায়ী মোঃ রুবেল(২২) কে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
২৪ আগস্ট হাজীগঞ্জ পৌরসভার মকিমাবাদ গ্রামের আঃ হামিদের ছেলে রাকু হোসেন রাজিব(২৫) ও ধেররা গ্রামের ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে সবুজ সর্দার(২৮) কে মাদক সেবনকালে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হয়।
২৩ আগস্ট হাজীগঞ্জ থানা উপ-পরিদর্শক বলাই চন্দ্র দেবনাথ এর নেতৃত্বে হাজীগঞ্জ পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ড রান্ধুনীমূড়া গ্রামের জুলহাস মিয়ার ছেলে খোরশেদ আলম(৩৮) কে ১০ পিচ ইয়াবা সহ আটক করা হয়। আসামীর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
২২ আগস্ট মঙ্গলবার হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড মকিমাবাদ গ্রামের আকরাম উদ্দিন বেপারি বাড়ির আবদুস সোবহানের ছেলে মো. শামীম হোসেন(২৫) কে ১০ পিচ ইয়াবা সহ আটক করা হয়। হাজীগঞ্জ থানায় এই বিষয়ে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
একই দিনে রাত পৌনে ১০ দশটায় হাজীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে মকিমাবাদ কাশেম গাজী বাড়ির আবুল হোসেনের ছেলে মো. আকতার হোসেন জনি(২৫) কে ৯২৫ পিচ ইয়াবা ও ৮ বোতল পেন্সিডিল সহ আটক করা হয়। বেলচোঁ-রামচন্দ্রপুর সড়কে সোনাইমুড়ি সাকিনস্থ আবদুল লতিফ মাস্টারের বাড়ীর পাকা রাস্তার উপর হইতে তাকে আটক করা হয়। তার সহযোগিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তারা সহ আসামীদের বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।
এছাড়াও আকতার হোসেন জনির বিরুদ্ধে চাঁদপুর সদর মডেল থানা ও হাজীগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দু’টি মামলার তদন্ত চলছে।
২৩ আগষ্ট পৌর এলাকার রান্ধুনীমুড়া গ্রামের জুলহাস মিয়ার ছেলে খোরশেদ আলম (২৮) কে ১০ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়।
২২ আগষ্ট মকিমাবাদ ৪ নং ওয়ার্ড আকরামউদ্দিন বেপারী বাড়ির আবদুস সোবহান এর ছেলে শামীম হোসেন (২৫) কে ১০ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়। ওই দিন একই এলাকার কাশারী বাড়ীর আবুল হোসেনের ছেলে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন জনিকে ৯২৫ পিস ইয়াবা ও ৮ বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক করা হয়।
১৮ আগষ্ট হাজীগঞ্জ কাপড়িয়া পট্রির আফজাল পাটওয়ারীর ছেলে জুয়েল পাটওয়ারীর বাসা থেকে ২৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
১০ আগস্ট টোরাগড় কাজী বাড়ির মেন্দু কাজীর ছেলে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী কাজী দুলাল (৪৪) কে ১৯৫ পিস ইয়াবা ও ২ বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক করা হয়। ওই দিন মাদক ব্যবসায়ী জনি ঘোষকে মাদকের মামলায় আটক করা হয়।
৯ আগস্ট রান্ধুনীমুড়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ী শাহজাহান (৩৫),মো.রুবেল (২৪) ও বিল্লাল হোসেন(৩৫) কে ২০ পিস ইয়াবা ও ২৫০ গ্রাম গাঁজাসহ হাতে নাতে আটক করা হয়।
২ই আগষ্ট রান্ধুনীমুড়া গ্রামের মৃত বাচ্চু মিয়ার ছেলে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ইবনে মিজান রনি (৪৬) কে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্যাড ও সীল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে কচুয়া ও মাগুড়া,ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একাদিক মামলা রয়েছে।
হাজীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোং জাবেদুল ইসলাম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘মাদক ব্যবসায়ীরা যতো বড় রাঘব বোয়াল হোক আইনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার সুযোগ নেই। এভাবে ধারাবাহিকতা থাকলে হাজীগঞ্জে মাদক জিরো টলারেন্সে চলে আসবে আশা করছি।’
চাঁদপুরের বাণিজ্যক উপজেলা হাজীগঞ্জের মাদক নিয়ন্ত্রণে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
প্রতিবেদক- জহিরুল ইসলাম জয়
: আপডেট, বাংলাদেশ ৭: ০০ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ